অভাগীর স্বর্গ গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর (PDF ১০০% বোর্ড কমন উত্তর উত্তর)

অভাগীর স্বর্গ গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

অভাগীর স্বর্গ গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর।অভাগীর স্বর্গ  গল্পকে বিশ্লেষণ করলে অনেকগুলো অনুধাবনমূলক প্রশ্ন পাওয়া যায় তার ভিতর বাছাইকৃত ও গুরুত্বপূর্ণ। নবম দশম শ্রেণীর বাংলা প্রথম পত্র অভাগীর স্বর্গ  গল্পের প্রশ্ন উত্তর নিম্নে দেওয়া হলো

অভাগীর স্বর্গ গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্ন-১. কাঙালীর মা কেন শবযাত্রার নিকট যেতে সাহস পায়নি?
উত্তর: কাঙালীর মা নীচু জাতের মানুষ বলে মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রীর শবযাত্রার নিকট যেতে সাহস পায়নি সংস্কারাবদ্ধ হিন্দু সমাজের সামন্তবাদের নির্মম শিকার কাঙালীর মায়ের মতো নীচু শ্রেণির মানুষ। তাই মর্মান্তিক কোনো মুহূর্তেও তাদের ভদ্রসমাজে প্রবেশাধিকার মেলে না। তাই দুলের মেয়ে বলে কাঙালীর মা মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রীর শবযাত্রায় অংশ নিতে পারে না। তাই দূর থেকে দাঁড়িয়েই কাঙালীর মা-কে সমস্ত অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া দেখতে হয়েছিল 

প্রশ্ন-২.বৃদ্ধ মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রীর মৃত্যুকে শোকের ব্যাপার মনে হলো না কেন? 
উত্তর: মৃতের শবযাত্রার আড়ম্বর ও সৎকারের ব্যাপকতা থাকায় বৃদ্ধ মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রীর মৃত্যুকে শোকের ব্যাপার মনে হলো না। বৃদ্ধ মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রীর মৃত্যুতে তাঁর চার ছেলে, তিন মেয়ে, নাতিনাতনি, জামাইরা, প্রতিবেশীর দল সবাই মিলে ভিড় করে দেখতে আসল। পুষ্পে, পত্রে, গন্ধে, মাল্যে, কলরবে মনে হলো না এ কোনো শোকের ব্যাপার— এ যেন বড় বাড়ির গৃহিণী পঞ্চাশ বর্ষ পরে আর একবার নতুন করে তার স্বামীগৃহে যাত্রা করছেন। 

প্রশ্ন-৩ ভাগ্যিমানী মা, তুমি সগ্যে যাচ্চো— আমাকেও আশীর্বাদ করে যাও’ – এখানে কাঙালীর মা কী ধরনের আশীর্বাদ চেয়েছিল?
উত্তর: উক্তিটির মাধ্যমে কাঙালীর মা মুখুয্যের স্ত্রীর আত্মার কাছে প্রার্থনা করেছিল তার মতো যেন সেও নিজ ছেলের হাতের আগুনটুকু পায়। মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় বহুকণ্ঠের হরিধ্বনির সাথে যখন ছেলের হাতের মন্ত্রপুত আগুন মৃতের মুখে সংযোজিত হয়েছিল তখন কাঙালীর মার চোখ থেকে ঝরঝর করে জল পড়তে থাকে। মনে মনে সে তাই মৃত আত্মার প্রতি প্রার্থনা করে, 'ভাগ্যিমানী মা, তুমি সগ্যে যাচ্চো আমাকেও আশীর্বাদ করে যাও, আমিও যেন এমনি কাঙালীর হাতের আগুনটুকু পাই।

প্রশ্ন-৪.নীল রঙের ধোঁয়ার মধ্যে কাঙালীর মা কেমন রথযাত্রীর দেখা পেয়েছিল? 
উত্তর: নীল রঙের ধোঁয়ার মধ্যে কাঙালীর মা তার কাঙ্ক্ষিত রথযাত্রীর দেখা পেয়েছিল। প্রজ্বলিত ধোঁয়ার মধ্যে কাঙালীর মা যেমন রথযাত্রীর স্বপ্ন দেখত ঠিক সেরকম রথযাত্রীই সে দেখতে পায়। গায়ে নানা ছবি আঁকা, চূড়ায় লতাপাতা জড়ানো রথের ভিতরে কে যেন বসে আছে, চেনা যায় না। কিন্তু সিঁথিতে সিদুর রেখা, পা দুটি আলতা রাঙানো। এমন একটি রথযাত্রার ছবি তার চোখে স্পষ্ট হয়ে উঠলে তার চোখ বেয়ে অবিরল ধারায় অশ্রু বয়ে চলে। 

প্রশ্ন ৫ ঊর্ধ্বদৃষ্টে চাহিয়া কাঙালীর মায়ের চোখে অশ্রুর ধারা বহিতেছিল’ কেন? 
উত্তর: ধর্মীয় অনুভূতির কারণে কাঙালীর মায়ের মনে হয় ঠাকুরদাস মুখুয্যের মৃত স্ত্রী রথে চড়ে স্বর্গে যাচ্ছে, এমন ভাবনায় কাঙালীর মায়ের চোখ পানি চলে আসে। সাতদিনের জ্বরে মুখুয্যের স্ত্রী মারা গেলেন। তার সৎকারের মহা আয়োজন হতে লাগল। পুষ্পে, পত্রে, গন্ধে, মাল্যে চারদিক মুখরিত হলো। মহাসমারোহে তাকে শ্মশান ঘাটে নিয়ে আসা হলো। কাঠের ভার, চন্দনের টুকরা, ঘৃত। মধু, ধূপ, ধুনা প্রভৃতি দিয়ে চিতায় মন্ত্রপূত অগ্নি সংযোজিত হলো। কাঙালীর মা দূরে থেকে এসব দৃশ্য দেখছিল। সদ্য-প্রজ্বলিত চিতার অজস্র ধুয়ার ভেতর রথে চড়ে বামুন মা স্বর্গে যাচ্ছে, কাঙালীর মায়ের কাছে এমন মনে হলো। তাই উর্ধ্বদৃষ্টে চেয়ে কাঙালীর মায়ের দুচোখে অশ্রুর ধারা বয়ে যাচ্ছিল। 

প্রশ্ন-৬. অভাগী সন্তানের হাতে মুখাগ্নি চায় কেন? 
উত্তর: মৃত্যুকালে সন্তানের হাতে মুখাগ্নি পাওয়া হিন্দুমতে সৌভাগ্যের বিষয়— এমন ধারণা থেকেই অভাগী সন্তানের হাতে মুখাগ্নি চায়। কাঙালীর অভাগী মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রীর মতো কেও একইরূপ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার কামনা করে। মনে মনে সে মৃত্যুর পর কাঙালীর হাতের আগুন প্রার্থনা করে। তার বিশ্বাস, বাঙালীর হাতের আগুন পেলে সে স্বর্গবাসী হবে। এ কারণেই অভাগী সন্তানের হাতে মুখাগ্নি চায়

প্রশ্ন-৭. ইস ছেলের হাতের আগুন, রথকে যে আসতেই হবে' কেন?
উত্তর: ছেলের হাতের আগুন পেলে স্বর্গে যাবার রথ আসবেই এমন ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে কাঙালীর মা অভাগী মন্তব্যটি করেছিল। কাঙালীর মা অভাগী মনে করে, সে মারা গেলে যদি তার ছেলে মন্ত্রপূত আগুন দেয় তাহলে সেও স্বর্গে যাবে। আর তাহলে কেউ তাকে ছোট জাত বলে ঘৃণা করতে পারবে না। এমনকি দুঃখী বলে তাকে কেউ ঠেকিয়েও রাখতে পারবে না। এজন্য অভাগী প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি করেছিলো।

প্রশ্ন-৮. 'মড়া-পোড়ানো বলতে নেই, পাপ হয়। কেন? 
উত্তর: প্রচলিত লোকবিশ্বাস থেকে মৃত ব্যক্তিকে সম্মান প্রদর্শনের জন্য অভাগী আলোচ্য উক্তিটি করে। অভাগী ঠাকুরদাস মুখুয্যের স্ত্রীর অন্ত্যোষ্টিক্রিয়া স্বচক্ষে দেখেছিল। সেই জাঁকজমকপূর্ণ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার কথা সে তার পুত্র কাঙালিকে শোনাচ্ছিল। কাঙালি দেখল তার মায়ের শরীর গরম তাই সে জিজ্ঞেস করে এই শরীর নিয়ে সে কেন মড়া-পোড়া দেখেছে। তখন অভাগী সম্ভ্রমের সাথে কাঙালীকে বলে যে মরা-পোড়া বলতে নেই, পাপ হয়। এটি একটি প্রচলিত লোকবিশ্বাস যে, কেউ মারা গেলে বলতে হয় যে তিনি স্বর্গে গেছেন, এতে মৃতের প্রতি সম্মান দেখানো হয়।

প্রশ্ন-৯‘তাই তাহাদের সমস্ত জীবনটা তাহাদের নিজের নামগুলোকেই যেন আমরণ ভ্যাঙচাইয়া চলিতে থাকে। কথাটি বুঝিয়ে লেখো। 
উত্তর: প্রশ্নোক্ত উক্তিটির মধ্য দিয়ে অভাগী ও কাঙালির নামের সাথে তাদের ভাগ্য বিড়ম্বনার অদ্ভূত মিলের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। গরিব মানুষের নামকরণও যেন কষ্টের প্রলেপ দিয়ে মোড়ানো। অভাগী যখন জন্মগ্রহণ করে তার মা মারা যায়। ফলে বাবা রাগ করে তার নাম রাখে ‘অভাগী’ । এই নামটাই যেন তাকে আমরণ অভাগী করে রাখে। এমনকি মৃত্যুর সময়ও মিলে না পোড়ানোর মতো কাঠ। ফলে অভাগী তার নামের মতোই আজীবন ভাগ্যবঞ্চিত থেকে যায়। প্রশ্নোক্ত উক্তিটি দ্বারা এটাই বোঝানো হয়েছে। 

প্রশ্ন-১০. জ্বরের ঘোরে কাঙালীর মা কাঙালীকে গল্পের ছলে কীসের গল্প বর্ণনা করেছিল? 
উত্তর: জ্বরের ঘোরে কাঙালীর মা তার নিজের জীবনেরই গল্প রূপকথার আদলে ছেলের কাছে বলে গিয়েছে। জীবন সায়াহ্নে এসে অভাগী জ্বরের ঘোরে তার ছেলের কাছে রূপকথা বলতে শুরু করে। কাঙালীও তার মায়ের গল্প শুনে রোমাঞ্চিত হয় বার বার। কিন্তু এই রূপকথার আদলেই অভাগী বলে যায় এমন এক রূপকথা যা তার নিজের জীবনেরই প্রতিরূপ। যে গল্প তার অন্যের কাছে শেখা নয়, নিজের সৃষ্টি। জ্বরের ঘোরে মৃত্যুর আগে অভাগী তার নিজের জীবনের গল্পই বলে যায়। 

প্রশ্ন-১১ কাঙালীর মা কেন কাঙালীকে ভাত রেঁধে খাওয়ার জন্য বলেছিল? 
উত্তর: মৃত্যুর পূর্বে সাংসারিক কাজকর্মে ছেলে কতটা পারঙ্গম তা দেখতেই অভাগী তার ছেলেকে রেঁধে খাওয়ার নির্দেশ দেয়। প্রত্যেক মা-ই চায় তার ছেলে স্বাবলম্বী হোক। কাঙালীর মা-ও তার ছেলের দক্ষতা দেখতে তাকে রেঁধে খাওয়ার জন্য বলে। কাঙালী অপটু হাতে রাঁধলেও তা স্বয়ংসম্পূর্ণতা পায়নি। তাই চোখের জল ফেলে দুঃখ প্রকাশ করে কাঙালীর মা কিভাবে রান্না করতে হয় তা শিখিয়ে দেয়।

প্রশ্ন-১২. ঈশ্বর নাপিতের মুখ গম্ভীর দেখে অভাগী কী বুঝতে পারল?
উত্তর: ঈশ্বর নাপিতের মুখ গম্ভীর দেখে অভাগী বুঝতে পারল, তার অন্তিম সময় এসে গিয়েছে অভাগীর অসুস্থতার সংবাদ গ্রামে প্রচারিত হলে ঈশ্বর নাপিত আসে তার নাড়ি পরীক্ষা করতে। গ্রামের মধ্যে সেই একমাত্র নাড়ি দেখতে জানতো। অভাগীর নাড়ি দেখে পরিস্থিতি বিবেচনায় সে মুখ গম্ভীর করে। ঈশ্বর নাপিতের মুখের এ গম্ভীর ভাব দেখে অভাগী বুঝতে পারে যে তার অন্তিম সময় এসে গেছে। 

প্রশ্ন-১৩ 'হায় রে অনভিজ্ঞ।' কেন এ কথা বলা হয়েছে? 
উত্তর: বাংলাদেশের জমিদার ও তাদের কর্মচারীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণা করতে না পারায় কাঙালীকে 'হায় রে অনভিজ্ঞ!' বলা হয়েছে। কাঙালীর মা অভাগী স্বর্গে যাওয়ার ইচ্ছায় মুখাগ্নির প্রত্যাশা করেছিল। সেই ইচ্ছাপূরণ করতে গিয়ে কাঙালী ও তার পিতাকে লাঞ্ছিত হতে হয়। অনভিজ্ঞ কাঙালী অধর রায়ের কাছে বিচার চাইতে যায়। যথারীতি অধর রায় তার দারোয়ানকে সমর্থন করে। কাঙালীর এমন নির্বুদ্ধিতায় লেখক তাকে অনভিজ্ঞ বলেছেন। 

প্রশ্ন-১৪ কাঙালীর ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়ে কাছারি বাড়ি যাওয়ার কারণ কী? 
উত্তর: অত্যাচারের বিচার চাওয়া এবং গাছ কাটার অনুমতি পাওয়ার জন্য কাঙালী ঊর্ধ্বশ্বাসে জমিদারের কাছারি বাড়িতে যায় । রসিক দুলে স্ত্রী অভাগীর সৎকারের জন্য নিজের বাড়ির বেলগাছ কাটতে যাওয়ায় জমিদারের দারোয়ান তাকে চড় মারে। কাঙালী ভেবেছিল, এ অন্যায়ের কথা যদি জমিদারের কানে পৌঁছানো যায়, তাহলে সুবিচার হবে এবং গাছ কাটার অনুমতি মিলবে। তাই কাঙালী ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়ে কাছারি বাড়িতে যায়। 

প্রশ্ন-১৫ রসিক দুলেকে জমিদারের দারোয়ানের চড় মারার কারণ কী
উত্তর: নিজ আঙিনার বেলগাছ কাটতে যাওয়াই রসিক দুলেকে জমিদারের দারোয়ানের চড় মারার কারণ। অভাগীর অন্তিম ইচ্ছা ছিল মৃত্যুর পর তাকে যেন চিতায় পোড়ানো হয়। এ কারণে তার মৃত্যুর পর রসিক দুলে অভাগীর হাতে পোঁতা বেলগাছটা কাটতে যায়। জমিদারের অনুমতি ছাড়া কোনো গাছ কাটতে পারে না তারা। তাই জমিদারের বিনা অনুমতিতে গাছ কাটতে যাওয়ায় রসিক দুলেকে জমিদারের দারোয়ান চড় মারে। 

প্রশ্ন-১৬, 'ওরে কে আছিস রে, এখানে একটু গোবর জল ছড়িয়ে দে'উক্তিটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে? 
উত্তর: অধর রায় অশৌচের ভয় প্রকাশ করতে গিয়ে আলোচ্য উক্তিটি করেছে। কাঙালী মায়ের মৃতদেহ দাহের কাঠ সংগ্রহের জন্য জমিদারের কাছারি বাড়িতে যায়। শোক ও উত্তেজনায় সে একেবারে উপরে উঠে যায়। তার কান্নাকাটিতে অধর রায় অত্যন্ত বিরক্ত হন। কাঙালী মড়া ছুঁয়ে এসেছে, তাই এখানকার কিছু ছুঁয়ে ফেললে অশৌচ হবে। উক্তিটির দ্বারা এই বিষয়টিকেই বোঝানো হয়েছে। 

প্রশ্ন-১৭. 'কি জাতের ছেলে তুই'— উক্তিটিতে কোন বিষয়টি ফুটে উঠেছে? 
উত্তর: আলোচ্য উক্তিটিতে তীব্র সাম্প্রদায়িক মনোভাব ফুটে উঠেছে। নিম্নবর্ণের কাঙালী, অধর রায়ের বাড়িতে গিয়ে তার মায়ের মৃত্যু ও দারোয়ানজীর আচরণ সম্পর্কে বলল। অধর রায় উচ্চবর্ণের হিন্দু। তাই জাত যাওয়ার ভয়ে তিনি চিন্তিত হলেন। তিনি সদ্য মা হারা কাঙালীকে সান্ত্বনা দিলেন না। দারোয়ানজীর দুর্ব্যবহারের প্রসঙ্গেও গেলেন না। বরং সবকিছুর ঊর্ধ্বে তার জাত জানতে চাইলেন যা, তার তীব্র সাম্প্রদায়িক মানসিকতাকে ফুটিয়ে তোলে। 

প্রশ্ন-১৮ 'সব ব্যাটারাই এখন বামুন-কায়েত হতে চায়’ – মুখুয্যেপুত্রের কথা বলার কারণ কী? 
উত্তর: কাঙালী মায়ের শবদাহ করার জন্য গাছ চাইতে মুখুয্যে বাড়িতে গেলে মুখুয্যেপুত্র তাকে অবজ্ঞা করে এ কথা বলেছিল। অভাগীর স্বর্গ গল্পে কাঙালীর মা অভাগী স্বর্গলাভের আশায় যথার্থ সৎকারের প্রত্যাশা নিয়ে মৃত্যুবরণ করে। কাঙালী সৎকারের কাজ সম্পন্ন করতে মুখুয্যে বাড়িতে কাঠের জন্য গিয়ে অপদস্থ হয়। দরিদ্র ও নীচুজাত হওয়ায় তাদের যেন অধিকার নেই শবদাহ করার। জাতভেদের সাথে সাথে আলোচ্য উক্তিতে প্রকট হয়ে উঠেছে সামন্তবাদ। দরিদ্র ও নীচুজাতের মানুষ হয়েও কাঙালীর মায়ের শবদাহ করার আকাঙ্ক্ষাকে ছোট করে দেখাতেই মুখুয্যেপুত্র বলেছেন, 'সব ব্যাটারাই এখন বামুন-কায়েত হতে চায়। 

প্রশ্ন-১৯. 'অভাগীর স্বর্গ' গল্পে তৎকালীন সমাজের নির্মম চিত্র ফুটে উঠেছে কীভাবে? 
উত্তর: 'অভাগীর স্বর্গ' গল্পে সামন্তবাদের স্বরূপ উন্মোচনের মধ্য দিয়ে তৎকালীন সমাজের নির্মম চিত্র ফুটে উঠেছে। কৌলিন্যনির্ভর তৎকালীন হিন্দু সমাজের নির্মম সামন্তবাদের শিকার অভাগী ও তার পরিবার। নীচুজাতের মানুষের সমাজে যে কোথাও কোনো স্থান নেই তারই স্পষ্ট চিত্র দেখা যায় ‘অভাগীর স্বর্গ' গল্পে। ফলে অভাগী রথে চড়ে স্বর্গ যাওয়ার যে চিত্র কল্পনা করে তা আর সম্ভব হয়নি। কাঠের অভাবে শবদাহের পরিবর্তে তাকে দেওয়া হয় মাটি 

বাংলা ১ম পত্র অনুধাবনমুলক প্রশ্ন উত্তর

Post a Comment

Previous Post Next Post