সুভা গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর (PDF ১০০% বোর্ড কমন উত্তর উত্তর)

সুভা গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

সুভা গল্পের গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর। সুভা গল্পেরগল্পকে বিশ্লেষণ করলে অনেকগুলো অনুধাবনমূলক প্রশ্ন পাওয়া যায় তার ভিতর বাছাইকৃত ও গুরুত্বপূর্ণ। নবম দশম শ্রেণীর বাংলা প্রথম পত্র সুভা গল্পের গল্পের প্রশ্ন উত্তর নিম্নে দেওয়া হলোসুভা গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্ন-১ সুভা নিজেকে সর্বদা গোপন রাখার চেষ্টা করত কেন? 
উত্তর: বাক্শক্তিহীন সুভাকে সবাই সংসারের বোঝা বলে মনে করত এবং এ ঘটনাটি তার জানা ছিল বলেই নিজেকে সে সর্বদা গোপন রাখার চেষ্টা করত। সুভা বোবা ছিল বলে তার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সবাই দুশ্চিন্তায় ছিল। কথা না বলতে পারলেও তার যে অনুভব শক্তি আছে এ কথাটি কেউ ভাবত না। শিশুকাল থেকেই সূভা বুঝে গিয়েছিল যে সংসারে সে কারো কাছেই সুদৃষ্টিপ্রাপ্ত নয়। এর ফলে তার ভেতরে এক ধরনের হীনম্মন্যতা তৈরি হয়েছিল। তাই সে নিজেকে সবার কাছ থেকে আড়াল করে রাখার চেষ্টা করত।

প্রশ্ন-২ কিন্তু, বেদনা কি কেহ কখনো ভোলে? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: বেদনা মানব হৃদয়ে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করে যার ফলে বেদনা কখনো কেউ ভুলতে পারে না। 'সুভা' গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র সুভা বাক্প্রতিবন্ধী। মেয়েরা যেহেতু মায়ের অংশবিশেষ সেহেতু সুভার ত্রুটিপূর্ণ জন্ম তার মাকে পীড়া দিত। সুভার মায়ের হৃদয়ে সদা জাগ্রত থাকত মেয়ের অপূর্ণতার দিকটি। সবসময় সুভার অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ কল্পনা করে তার হৃদয় বেদনায় নিমজ্জিত থাকত। যতই বেদনা ভুলে থাকতে চাইত ততই মনে পড়ত। বেদনার ধর্মও তাই। এই জন্য বেদনা কেউ ভুলতে পারে না। 

প্রশ্ন-৩ পিতামাতার মনে সুভা সর্বদাই জাগরূক ছিল কেন?
উত্তর: সুভা বাপ্রতিবন্ধী হওয়ায় তার ভবিষ্যতের পরিণতি চিন্তায় পিতামাতার মনে সে সর্বদা জাগরুক ছিল।বাষ্প্রতিবন্ধী হওয়ায় সুভা নিজেকে বিধাতার অভিশাপ বলে মনে করত। সুভার ভবিষ্যতের কথা ভেবে তার বাবা-মা যেমন শঙ্কিত থাকতেন তেমনি প্রতিবেশীদেরও তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তার অন্ত ছিল না। মা সুভাকে গর্ভের কলঙ্ক মনে করতেন। সুভার এই প্রতিবন্ধকতার কারণে সর্বদাই সে তার পিতামাতার মনে অস্বস্তি হিসেবে জাগরুক ছিল। 

প্রশ্ন-৪ মাতা পুত্র অপেক্ষা কন্যাকে নিজের অংশরূপে দেখেন কেন?
 উত্তর: কন্যার কোনো অপূর্ণতা দেখলে সেটা নিজের ত্রুটি ও লজ্জার কারণ মনে করে মাতা পুত্র অপেক্ষা কন্যাকে নিজের অংশরূপে দেখেন। সুভা বোবা হয়েই জন্মগ্রহণ করেছে। মাতা তাকে নিজের গর্ভের কলঙ্ক জ্ঞান করতেন। তাকে নিজের একটা ত্রুটিস্বরূপ দেখতেন এবং এটাকে নিজের লজ্জার কারণ বলে মনে করতেন। কন্যার এই অসম্পূর্ণ দিকের জন্য মাতা নিজেকে দায়ী মনে করতেন বলে পুত্র অপেক্ষা কন্যাকে নিজের অংশরূপে দেখেন। 

প্রশ্ন-৫ কিন্তু, তাহার সুদীর্ঘ পল্লববিশিষ্ট বড় বড় দু'টি কালো চোখ ছিল'— কথাটি বুঝিয়ে লেখো। 
উত্তর: সুভার সৌন্দর্য বর্ণনায় প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করা হয়েছে। সুভা স্বাভাবিক মানুষ হিসেবে পৃথিবীর আলোয় আলোকিত হয়নি। স্রষ্টা তাকে মানুষ হিসেবে সৃষ্টি করলেও তার কণ্ঠের কথা অপূর্ণ রেখে দেন। তবে সুভার বাক্ না থাকলেও তার সুদীর্ঘ পল্লববিশিষ্ট বড় বড় দুটি কালো চোখ ছিল। যার সৌন্দর্য লেখকের কাছে ছিল অপার বিস্ময়। 

প্রশ্ন-৬'কালো চোখকে কিছু তর্জমা করিতে হয় না।কেন বলা হয়েছে?
উত্তর: মানুষের মনের ভাবের খেলা চোখের মাধ্যমে স্বাভাবিকভাবেই প্রকাশিত হয় বলে আলোচ্য কথাটি বলা হয়েছে। কথা বলে আমরা যে ভাবের প্রকাশ করি তা অনেকটাই শব্দের মাধ্যমে অনুবাদ বা তর্জমা করতে হয়। কিন্তু চোখের মাধ্যমে আমরা যে ভাবের জগৎ অনুভব করি তা আর কোনো শব্দে অনুবাদ করতে হয় না। প্রাকৃতিকভাবেই তা ভাব প্রকাশক হয়ে ওঠে। ফলে শব্দ প্রকাশের ক্ষেত্রে যে সীমাবদ্ধতা তৈরি হয়, তা আর থাকে না। তাই চোখকে কোনোকিছু অনুবাদ করতে হয় না। 

প্রশ্ন-৭“প্রকৃতি যেন তাহার ভাষার অভাব পূরণ করিয়া দেয়।”— বাক্যটিতে কী বোঝানো হয়েছে? 
উত্তর: প্রকৃতির সঙ্গে সুভার গভীর সম্পর্কের বিষয়টিই উন্মোচিত হয়েছে আলোচ্য মন্তব্যে। নদীর তীরে বসলে সুভা নদীর কলধ্বনি, লোকের কোলাহল, মাঝির গান, পাখির ডাক, তরুর মর্মর সমস্ত মিলেমিশে একাকার হয়ে যেত। এগুলো যেন তার হয়ে কথা বলত। প্রকৃতির এই বিবিধ শব্দ এবং বিচিত্র গতিও সুভার ভাষার মতো নীরব অথচ বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত। আর তাই লেখক বলেছেন, “প্রকৃতি যেন তাহার ভাষার অভাব পূরণ করিয়া দেয়।

প্রশ্ন-৮ “কিন্তু তাহার পদশব্দ তাহারা চিনিত” বাক্যটির প্রাসঙ্গিকতা ব্যাখ্যা করো। 
উত্তর: সুভা বোবা হলেও গোয়ালের গাভী দুটি যে তার পায়ের শব্দে তার আগমন বুঝতে পারে তা বোঝাতে আলোচ্য উক্তিটি করা হয়েছে। ‘সুভা’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র সুভা জন্ম থেকেই বোবা। সে কথা বলতে না পারলেও অনেকেই তার মনের ভাষা বিভিন্ন উপায়ে বুঝতে পারে। এমন দুটি প্রাণী হচ্ছে সুভাদের গোয়ালের দুটি গাভী। গাভী দুটি সুভার মনের সমস্ত ভাষাই বুঝতে পারে। তারা সুভার পায়ের শব্দ শুনেই বুঝে নিত যে সুভা আসছে। কারণ তাদের কাছে সুভার পায়ের শব্দ ছিল অতি পরিচিত। আলোচ্য উক্তিটি দ্বারা এ বিষয়টিকেই বোঝানো হয়েছে। 

প্রশ্ন-৯ ঘরে কঠিন কথা শুনে সুভা গোয়াল ঘরে যেত কেন? 
উত্তর: বন্ধুস্বরূপ গাভী দুটির কাছ থেকে সান্ত্বনা লাভের জন্য ঘরে কঠিন কথা শুনলে সুভা গোয়ালঘরে যেত। কোনো ভর্ৎসনা বা কঠিন কথা শোনার পর সুভা গোয়াল ঘরে ঢুকে তার মূক বন্ধুদুটির কাছে আসত। সুভার সহিষ্ণুতা পরিপূর্ণ বিষাদ-শান্ত দৃষ্টিপাত থেকে গোয়ালের এই দুটি গাভী কী একটা অন্ধ অনুমান শক্তির দ্বারা সুভার মর্মবেদনা যেন বুঝতে পারত এবং তারা সুভার গা ঘেঁষে তার বাহুতে অল্প করে শিং ঘষে তাকে নির্বাক ব্যাকুলতার সাথে সান্ত্বনা দিতে চেষ্টা করত। এর ফলে সুভার মনের বেদনা কিছুটা হলেও প্রশমিত হতো। 

প্রশ্ন-১০ অকর্মণ্য লোকেরা কীভাবে নিঃসম্পর্ক মানুষের প্রিয়পাত্র হয়? ব্যাখ্যা করো। 
উত্তর: অকর্মণ্য লোকের নিঃস্বার্থভাবে নিঃসম্পর্ক মানুষদের নানা উপকারে আসে বলে তারা প্রায়ই মানুষের প্রিয়পাত্র হয়ে ওঠে। অকর্মণ্য লোকেরা কোনো কাজে আসে না বলে আত্মীয়রা তাদের ওপর বিরক্ত থাকে। কিন্তু অনেক সময় নিঃসম্পর্ক মানুষের কাছে এই অকর্মণ্য লোকেরা প্রিয়পাত্র হয়ে ওঠে। কারণ, তারা কোনো কাজ না করায় সবসময় তাদের হাতে অনেক সময় থাকে। ফলে কাজে-কর্মে, আমোদে-অবসরে যেখানে একটা লোক কম পড়ে সেখানেই তাদের হাতের কাছে পাওয়া যায়। 

 প্রশ্ন-১২. প্রতাপ সুভার মর্যাদা বুঝত কেন? ব্যাখ্যা করো। 
উত্তর: মাছ ধারার সময় বাক্যহীন সঙ্গীই সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ বলে প্রতাপ সুভার মর্যাদা বুঝত। প্রতাপের প্রধান শখ ছিল ছিপ ফেলে মাছ ধরা। অপরাহ্ণে প্রায়ই সে এই কাজে নিযুক্ত হতো এবং এই উপলক্ষ্যে সুভার সাথে তার প্রায়ই দেখা হতো। প্রতাপ কোনো কাজ করার সময় একজন সঙ্গী পেলে খুব খুশি হতো। সুভা যেহেতু বাপ্রতিবন্ধী তাই মাছ ধরার সময় সে কোনো ব্যঘাত সৃষ্টি করবে না। এ কারণে প্রতাপ সুভার মর্যাদা বুঝত। 

প্রশ্ন-১৩. মাছ ধরার কাজে প্রতাপের কাছে সুভার মর্যাদা বেশি ছিল কেন? 
উত্তর: নিঃসঙ্গতা দূর করার জন্যই মাছ ধরার কাজে প্রতাপের কাছে সুভার মর্যাদা বেশি ছিল। ছিপ ফেলে মাছ ধরা ছিল প্রতাপের প্রধান শখ। বিকালে নদীতীরে প্রায়ই সে মাছ ধরতে যেত। এই মাছ ধরা উপলক্ষ্যেই সুভার সাথে প্রতাপের দেখা হতো। মাছ ধরার মতো মনোযোগপূর্ণ কাজে নির্বাক সঙ্গীই আদর্শ। সুভা ছিল বাকপ্রতিবন্ধী। আর তাই মাছ ধরার কাজে প্রতাপের কাছে সুভার মর্যাদা বেশি ছিল। 

প্রশ্ন-১৪. সুভা কেন মনে মনে অলৌকিক ক্ষমতা প্রার্থনা করত?
 উত্তর: প্রতাপকে অভিভূত করার জন্য সুভা মনে মনে অলৌকিক ক্ষমতা প্রার্থনা করত। 
সুভা মনে মনে প্রতাপকে ভালোবাসত। তাই প্রতাপ যখন নদীর তীরে বসে মাছ ধরত তখন সুভা তার পাশে বসে ভাবত সে যদি প্রতাপের কোনো কাজে বা সাহায্যে আসতে পারত। কিন্তু তার কিছুই করার ছিল না। তাই সে বিধাতার কাছে অলৌকিক ক্ষমতা প্রার্থনা করত— যেন হঠাৎ মন্ত্রবলে সে এমন একটা আশ্চর্য কাণ্ড ঘটিয়ে দিতে পারে যা দেখে প্রতাপ অভিভূত হয়। বস্তুত প্রতাপের মন জয় করার জন্যই সুভা অলৌকিক ক্ষমতা প্রার্থনা করত 

প্রশ্ন-১৫ পূর্ণিমা প্রকৃতি কেন সুভার মতো একাকিনী? 
উত্তর: পূর্ণিমা সৌন্দর্যময়ী কিন্তু শব্দময়ী নয়। তাই গভীর পূর্ণিমা রাতে একেকদিন সুভা যখন শয্যাগৃহের বাইরে এসে দাঁড়ায় তখন পূর্ণিমা প্রকৃতিকেও তার মতো একাকিনী দেখে। যেন ঘুমন্ত জগতের ওপর জেগে বসে যৌবনের রহস্যে পুলকে বিষাদে অসীম নির্জনতার একেবারে শেষ সীমা পর্যন্ত, এমন কি তা অতিক্রম করেও থমথম করছে, একটি কথাও বলছে না। প্রকৃতির এই নিস্তব্ধ ব্যাকুলতা যেন সুভার মতোই নিঃসঙ্গ। 

প্রশ্ন-১৯. সুভা মর্মবিদ্ধ হরিণীর মতো তাকিয়েছিল কখন? কেন? বুঝিয়ে লেখো। 
উত্তর: বিয়ের বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রশ্ন করলে সুভা প্রতাপের দিকে মর্মবিদ্ধ হরিণীর মতো তাকিয়েছিল। সুভার বিয়ের বন্দোবস্ত হচ্ছে— এই নিয়ে তার হৃদয়ে বেদনা ভর করেছিল। তাই অজানা জীবনে যাত্রার প্রাক্কালে তার মনে যে শঙ্কা জেগেছিল তা প্রবল হয় প্রতাপের বিয়ে সম্পর্কিত প্রশ্নে। সুভার বিয়ের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য জানতে চাইলে সুভা প্রতাপের দিকে মর্মবিদ্ধ হরিণীর মতো তাকিয়েছিল। এর মধ্য দিয়ে সুভার মাঝে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার বেদনা সঞ্চার হয়। 
প্রশ্ন-২০. মেয়েকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে বাণীকণ্ঠের কপোলে অশ্রু গড়িয়ে পড়ল কেন? 
উত্তর: মেয়ের প্রতি অসীম ভালোবাসার জন্য তাকে সান্ত্বনা দিতে বাণীকণ্ঠের কপোলে অশ্রু গড়িয়ে পড়ল। বাক্‌প্রতিবন্ধী সুভাকে সমাজের কেউ ভালোবাসে না। এমনকি মা-ও তার ওপর এতটাই বিরক্ত যে তিনি সুভাকে নিজের গর্ভের কলঙ্ক মনে করেন। কিন্তু সুভার বাবা বাণীকণ্ঠ তাকে অন্য মেয়েদের তুলনায় বেশি স্নেহ করেন। তিনি বুঝতে পারেন নিজের বাড়ি ছেড়ে কলকাতায় যেতে সুভার অনেক কষ্ট হবে। মেয়ের বেদনায় নিজেও জর্জরিত হয়েছিলেন বলেই তাকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে বাণীকণ্ঠের কপোল বেয়ে অশ্রু ঝরল।

প্রশ্ন-১১. প্রতাপ কেমন প্রকৃতির মানুষ ছিল? ব্যাখ্যা করো। 

উত্তর: প্রতাপ ছিল নিতান্তই ভবঘুরে ও উদাসীন প্রকৃতির মানুষ । প্রতাপ ছিল অকর্মণ্য একজন লোক। মা-বাবা বহু চেষ্টা করেও প্রতাপের মাধ্যমে সংসারের উন্নয়নমূলক কোনো কাজ করাতে পারেনি। ফলে বাবা-মা প্রতাপের আশা ছেড়ে দিয়েছেন। এই সব লোকেরা যেমন অনেকেরই ব্রিক্তির কারণ হয়ে ওঠে তেমনি প্রয়োজনের সময় হয়ে ওঠে প্রিয়পাত্র। প্রতাপও সবার কাছে এমন ছিল। 

প্রশ্ন-১৬. সুভাকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলো কেন? 

উত্তর: গ্রামের মানুষের নিন্দা ও একঘরে হওয়ার ভয়ে বিয়ে দেওয়ার উদ্দ্যেশ্য সভাকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়।সুভার বয়স ক্রমেই বেড়ে চলছিল। তৎকালীন সমাজে তার বয়সের মেয়েদের বিয়ে না হলে তা নিয়ে নিন্দা করা হতো। সুভা বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে বিয়ে করতে রাজি হয় না কেউ। ফলে তার পরিবারকে নিয়ে সমালোচনা বাড়তে থাকে। উপরন্তু সুভার বাবা সচ্ছল গৃহস্থ হওয়ায় তার কিছু শত্রুও ছিল। তাদের প্ররোচনায় পরিবারটিকে একঘরে করা হবে বলেও গুজব ছড়ায়। এ কারণেই সুভাকে বিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ গৃহীত হয়। 

প্রশ্ন-১৭ বিদেশ যাওয়ার প্রাক্কালে সুভার মনের অবস্থা কেমন ছিল?

উত্তর: বিদেশে যাওয়ার প্রাক্কালে অজানা আশঙ্কায় সুভার মন আচ্ছন্ন ছিল। বিদেশ যাওয়ার সময় কুয়াশা-ঢাকা প্রভাতের মতো সুভার সমস্ত হৃদয় অশ্রুবাষ্পে ভরে যায়। একটা অনির্দিষ্ট আশঙ্কায় সে কিছুদিন থেকেই ক্রমাগত নির্বাক জন্তুর মতো তার বাবা-মায়ের সঙ্গে সঙ্গেই থাকত। ডাগর চক্ষু মেলে তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা বোঝার চেষ্টা করত। কিন্তু তারা তাকে কিছুই বুঝিয়ে বলত না। ফলে একটা ধোঁয়াশাপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যে সুভার মন সর্বদা ঘুরপাক খেত। 

 প্রশ্ন-১৮ “দেখিস আমাদের ভুলিস নে।”— প্রতাপ কেন বলেছিল?

উত্তর: বিয়ে হয়ে গেলে সুভা যেন তাকে না ভুলে যায়— প্রতাপ ঠাট্টাচ্ছলে সে কথাটিই বলেছিল। একদিন বিকেলে নদীর তীরে বসে মাছ ধরার সময় প্রতাপ সুভার উদ্দেশ্যে প্রশ্নে উল্লিখিত উক্তিটি করেছিল। সুভার বিয়ের খবর শুনে প্রতাপ হেসে হেসে সুভাকে বলেছিল বিয়ের পর সুভা যেন সবাইকে ভুলে না যায়। বস্তুত প্রতাপ এ উক্তির মধ্য দিয়ে সুভাকে বোঝাতে চেয়েছে, সে সুভার শুভাকাঙ্ক্ষী। 


বাংলা ১ম পত্র অনুধাবনমুলক প্রশ্ন উত্তর

Post a Comment

Previous Post Next Post