পহেলা বৈশাখ গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (PDF ১০০% বোর্ড কমন উত্তর উত্তর)

পহেলা বৈশাখ গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

পহেলা বৈশাখ দিনগুলি গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর । পহেলা বৈশাখ গল্পকে বিশ্লেষণ করলে অনেকগুলো অনুধাবনমূলক প্রশ্ন পাওয়া যায় তার ভিতর বাছাইকৃত ও গুরুত্বপূর্ণ । নবম দশম শ্রেণীর বাংলা প্রথম পত্র পহেলা বৈশাখ গল্পের প্রশ্ন উত্তর নিম্নে দেওয়া হলো

পহেলা বৈশাখ গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন-১. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এসো হে বৈশাখ গানটির মূলভাব ব্যাখ্যা 
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘এসো হে বৈশাখ' গানটিতে বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানানো হয়েছে। বাংলা নতুন বছরের সূচনা হয় বৈশাখ মাসের আগমনের মাধ্যমে বৈশাখের রুদ্র ঝড় বিগত বছরে পুরোনো অস্তিত্বকে উড়িয়ে নিয়ে সজীব প্রকৃতি দান করে। জীর্ণতাকে ভুলে গিয়ে নতুনকে অভিবাদন জানানোর বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে গানটিতে। 

প্রশ্ন- ২ বাংলা নববর্ষকে এদেশের জনগণের নওরোজ বলা হয় কেন? 
উত্তর: পুরোনো জীর্ণ অস্তিত্বকে বিদায় দিয়ে নববর্ষ নবীন সতেজ এক জীবনে প্রবেশ করে বলে বাংলা নববর্ষকে এদেশের জনগণের নওরোজ বলা হয় নওরোজ শব্দের অর্থ নতুন দিন। বাঙালি জাতি বহু বছর ধরে বাংলা নববর্ষকে নানান আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে উদযাপন করে আসছে। এই দিনটি সারা বছরের অন্যান্য দিনগুলি থেকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র হয়ে গৌরবমণ্ডিত হয়ে উঠত। পুরোনো জীর্ণ অস্তিত্বকে বিদায় দিয়ে এইদিনে জাতি একটি নবীন সতেজ জীবনে প্রবেশ করে আনন্দানুভূতি নিয়ে। আর তাই বাংলা নববর্ষকে এদেশের জনগণের নওরোজ বলা হয়। 

প্রশ্ন-৩ কোনটি কৌতূহলোদ্দীপক ও ন্যক্কারজনক এবং কেন? 
উত্তর: বাংলা নববর্ষ উদযাপন নিয়ে পাকিস্তানি শাসকবর্গের মাঝে যে নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ পেয়েছিল তা কৌতূহলোদ্দীপক ও ন্যক্কারজনক। ১৯৪৭ সালে মহাদেশ বিভক্তির পর পূর্বপাকিস্তানে বাংলা নববর্ষ উদযাপন নিয়ে পাকিস্তানি শাসকবর্গের মাঝে উপনিবেশবাদী, ক্ষীণদৃষ্টি, ধর্মান্ধ মনোভাব দেখা দেয়। নববর্ষকে বাঙালির উৎসব হিসেবে না নিয়ে একে নির্দিষ্ট ধর্ম ও সম্প্রদায়ের উৎসব হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। পাকিস্তানি শাসকবর্গের এ ধরনের মানসিকতা বাঙালির সাংস্কৃতিক পরিচয়কে আঘাত করেছিল। তবে পূর্ব পাকিস্তানে শিক্ষিত মানুষ ধর্ম ও সম্প্রদায় নিরপেক্ষভাবে প্রতিবাদী মনোভাব নিয়েই বাংলা নববর্ষ উদযাপন করেছে। 

প্রশ্ন-৫ স্বাধীন বাংলাদেশের পয়লা বৈশাখ উদযাপনের পরিচয় দাও।
 উত্তর: স্বাধীন বাংলাদেশে নানা আনন্দ উৎসবের মাধ্যমে মুখর হয়ে ওঠে পয়লা বৈশাখ। স্বাধীন বাংলায় পয়লা বৈশাখের মূল আয়োজন হয় শহরাঞ্চলে । ব্যবসায়ী মহল আয়োজন করে হালখাতা, মিঠাই বিতরণ ইত্যাদি অনুষ্ঠানের। এর পাশাপাশি ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, প্রদর্শনী, খেলার আসর, সঙ্গীতানুষ্ঠান, বক্তৃতা-ভাষণ, আলোচনা সভা ইত্যাদিরও আয়োজন হয়। চিরায়ত গ্রামীণ ঐতিহ্যের পাশাপাশি শহুরে সংস্কৃতির মেলবন্ধনও স্বাধীন বাংলাদেশের নববর্ষ উদযাপনের লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য। নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত হয়েছে। নববর্ষে পুরাতন সকল জীর্ণতাকে দূর করে মানুষ নতুন বছরকে নতুন উদ্যমে স্বাগত জানায়। নতুন বছরের নতুন সূর্যের আলোর স্পর্শে পৃথিবী | কবিতা আবৃত্তি, যেন নির্মল হয়ে ওঠে। সকল অসঙ্গতিকে দূরে ঠেলে নব জীবনের করা প্রত্যাশার কথাই আলোচ্য উক্তিটিতে ব্যক্ত হয়েছে। 

প্রশ্ন-৬. হালখাতা অনুষ্ঠানটি পালন করা হয় কেন? 
উত্তর: নতুন বছরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের হিসাব-নিকাশ হালনাগাদ করার জন্য হালখাতা অনুষ্ঠানটি পালন করা হয়। হালখাতা বাংলা নববর্ষের একটি অন্যতম অনুষ্ঠান। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পুরোনো বছরের বকেয়া আদায় ও নতুন বছরের শুরুতে সকল হিসাব-নিকাশকে চলমান করার জন্য এ অনুষ্ঠান পালিত হয়। নতুন বছরের শুরুর দিকটিকে গুরুত্ব দিয়েই পহেলা বৈশাখে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এ অনুষ্ঠানটি পালন করা হয় 

প্রশ্ন-৭. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কীভাবে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা হয়?
উত্তর: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আনন্দমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা হয়। নববর্ষ উদযাপনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করার মধ্যে রয়েছে নানা ধরনের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, প্রদর্শনী ও মেলার আসর, সঙ্গীতানুষ্ঠান, কবিতা আবৃত্তি, আলোচনা সভা, বক্তৃতা-ভাষণ প্রভৃতি। নববর্ষ উদযাপনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের পাশাপাশি জনসাধারণও সাদরে অংশগ্রহণ করে। 
প্রশ্ন-৮ পয়লা বৈশাখকে কোন অবস্থা থেকে উদ্ধার করা প্রয়োজন? 
উত্তর: পয়লা বৈশাখকে উচ্চবিত্ত নাগরিকের বুর্জোয়া বিলাস থেকে উদ্ধার করা প্রয়োজন। পয়লা বৈশাখ বাঙালির ঐতিহ্য ও প্রাণের উৎসব। এখানে জাতি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলে মিলিত হয়। কিন্তু ইদানীং দেখা যায়, পয়লা বৈশাখ মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত শ্রেণির কিছু মানুষের বুর্জোয়া বিলাস ও ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। যা মোটেও কাম্য নয়। এ অবস্থা থেকে পয়লা বৈশাখকে উদ্ধার করতে হবে। 
প্রশ্ন-৯ পাকিস্তান আমলে এ অঞ্চলের শিক্ষিত মানুষ কীভাবে বাঙালি চেতনা ও আদর্শের প্রকাশ ঘটিয়েছে? ব্যাখ্যা করো। 

উত্তর: পাকিস্তান আমলে এ অঞ্চলের শিক্ষিত মানুষ পয়লা বৈশাখ উদযাপন করার মাধ্যমে বাঙালি চেতনা ও আদর্শের প্রকাশ ঘটিয়েছে। ধর্মান্ধ ও ক্ষীণদৃষ্টি সম্পন্ন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী পরাধীন বাঙালিকে ‘পয়লা বৈশাখ উদযাপনে বাধা দেয়। তখন এ অঞ্চলের শিক্ষিত সম্প্রদায় প্রতিবাদী মনোভাব নিয়ে পরম উৎসাহে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করে। এর ভেতর দিয়ে বাঙালির জাতীয়তাবাদী চেতনা ও ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শের প্রতিফলন ঘটে। 

প্রশ্ন-৪ বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ফলে ব্রিটিশ আমলে কীভাবে আমাদের জাতীয়তাবাদী চেতনার প্রতিফলন ঘটেছিল? 

উত্তর: বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ফলে ব্রিটিশ আমলে আমাদের জাতীয়তাবাদী চেতনার প্রতিফলন ঘটেছিল অধিকার আদায়ের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক রাজত্বের দিনগুলোতে এক পর্যায়ে বাংলা নববর্ষ পালনের মধ্য দিয়ে এদেশের শোষিত ও পরাধীন জনগণের মনে স্বাদেশিকতা ও জাতীয়তাবাদী চেতনার প্রতিফলন ঘটে। বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে বাংলা নববর্ষকে অবলম্বন করেই জাতীয়তাবাদী অনুষঙ্গের সঙ্গে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চেতনা যুক্ত হয়েছিল।

বাংলা ১ম পত্র অনুধাবনমুলক প্রশ্ন উত্তর

Post a Comment

Previous Post Next Post