সাহিত্যের রূপ ও রীতি গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (PDF ১০০% বোর্ড কমন উত্তর উত্তর)

সাহিত্যের রূপ ও রীতি  গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

সাহিত্যের রূপ ও রীতি  গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর। সাহিত্যের রূপ ও রীতি দিনগুলি গল্পকে বিশ্লেষণ করলে অনেকগুলো অনুধাবনমূলক প্রশ্ন পাওয়া যায় তার ভিতর বাছাইকৃত ও গুরুত্বপূর্ণ । নবম দশম শ্রেণীর বাংলা প্রথম পত্র সাহিত্যের রূপ ও রীতি  গল্পের গল্পের প্রশ্ন উত্তর নিম্নে দেওয়া হলোসাহিত্যের রূপ ও রীতি  গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন-১ কবিতা' বলতে কী বোঝ?
উত্তর: ছন্দোবদ্ধ পদ্যকে কবিতা বলে। কবিতায় রহস্যময় মানবমন ও চরিত্রের নানান দিক উন্মোচিত হয়। কবিতার সঙ্গে পৃথিবী, মানব জীবন, প্রকৃতির রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। বহির্জগতের রূপ-রস-গন্ধ-স্পর্শ আপন মনের অনুভূতিজাত হয়ে যথাবিহিত শব্দও ভাবে বাস্তব সুষমামণ্ডিত চিত্রার্থক ও দ্বন্দ্বময়রূপ লাভ করার মধ্য দিয়ে সৃষ্টি হয় কবিতা । 

প্রশ্ন-২ মহাকাব্যকে অতিশয় দীর্ঘ কাহিনি কবিতা বলা হয় কেন
উত্তর: মহাকাব্যে দীর্ঘ কোনো কাহিনি কবিতার আকারে উল্লেখ করা হয়। বলে একে অতিশয় দীর্ঘ কাহিনি কবিতা বলা হয়। মহাকাব্য রচিত হয় যুদ্ধবিগ্রহের কোনো কাহিনি অবলম্বনে। যেমন রামায়ণে বর্ণিত হয়েছে রাম, সীতা ও রাবণের মধ্যকার দ্বন্দ্বের কথা। আর মহাভারতের মূল কাহিনি গড়ে উঠেছে পৌরাণিক চরিত্র পাণ্ডব আর কৌরবদের মধ্যকার যুদ্ধকে কেন্দ্র করে। এ দুটোর পরিসরই অনেক বড়। তাই কাব্যের আকারে লিখিত হলেও মহাকাব্যকে অতিশয় দীর্ঘ কাহিনি কবিতা বলে অভিহিত করা হয়। 

প্রশ্ন-৩ রামায়ণ সম্পর্কে বুঝিয়ে লেখো। 
উত্তর: রামায়ণ হলো প্রাচীন ভারতবর্ষে রচিত মহাকাব্য। এর কাহিনি হলো পত্নী সীতাকে নিয়ে যুবরাজ রামচন্দ্রের বনবাস। লঙ্কা দ্বীপের রাজা রাবণ সীতাকে হরণ করে লঙ্কায় নিয়ে আসে। সীতাকে উদ্ধারের জন্য রাম ও রাবণের মধ্যে যে যুদ্ধ হয় সেটিই রামায়ণ-কথা। 

প্রশ্ন-৪ কমেডির বিষয়ে এরিস্টোটলের বক্তব্য বুঝিয়ে লেখো।
 উত্তর: গ্রিক দার্শনিক এরিস্টোটলের ভাষ্যমতে, যা কৌতুকপ্রদ কিন্তু তা কাউকে পীড়া বা ব্যথা না দিয়ে শুধু হাস্যরস সৃষ্টি করে, তাকে কমেডি বলে। এরিস্টোটল বুঝিয়েছেন যে কৌতুকের জন্ম ইচ্ছার সঙ্গে বাস্তব অবস্থার, মানুষের আশা বা আকাঙ্ক্ষার সাথে প্রাপ্তির, উদ্দেশ্য বা কথার সঙ্গে কাজের অমিলের মধ্য দিয়ে। কমেডি আমাদের মানবসুলভ ত্রুটিবিচ্যুতি ও নির্বুদ্ধিতার পরিণাম প্রদর্শন করে অশোভন দুর্বলতার হাত থেকে মুক্তি দেয়। 

প্রশ্ন-৫ প্রহসন' বলতে কী বোঝ? 
উত্তর: সমাজের নানা অসঙ্গতি ও ত্রুটি-বিচ্যুতি হাস্যরসাত্মকভাবে তুলে ধরাকে প্রহসন বলে। কাহিনির বিষয়বস্তু ও পরিণতির দিক থেকে বিচার করলে নাটকের যে তিনটি শ্রেণিবিভাগ পাওয়া যায় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে প্রহসন। প্রহসনে নাট্যকার ব্যঙ্গ বিদ্রূপের মধ্য দিয়ে সামাজিক অসঙ্গতির মূলে আঘাত করেন। বেদনার পটভূমিতে এ প্রহসনের জন্ম হলেও অশ্রু সজল হাস্যরসের মধ্য দিয়ে এর যবনিকাপাত ঘটে। 

প্রশ্ন-৬ ট্র্যাজেডি বলতে কী বোঝায়? 
উত্তর: ট্র্যাজেডি বলতে বিয়োগান্তক কোনো উপস্থাপনাকে বোঝায়। ট্র্যাজেডি (Tragedy) সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য মতামত পাওয়া যায় গ্রিক সাহিত্যিক ও দার্শনিক এরিস্টোটলের (Aristotle) কাছ থেকে। তাঁর মতে, 'রঙ্গমঞ্চে নায়ক বা নায়িকার জীবন কাহিনির দৃশ্য পরম্পরা উপস্থাপনের মাধ্যমে যে নাটক দর্শকের হৃদয়ে ভয় ও করুণা প্রশমিত করে তার মনে করুণ রসের সৃষ্টি করে সেটাই হলো ট্র্যাজেডি। 

প্রশ্ন-৭ ছোটগল্প সম্পর্কে বুঝিয়ে লেখো। 
উত্তর: ছোটগল্প হচ্ছে উপন্যাসের মতোই কোনো না কোনো কাহিনির বর্ণনা তবে তা বড় আকারের নয়। ছোটগল্পে উপন্যাসের মতো কাহিনির ভিতরের ঘটনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কখনোই বলে দেয় না। ছোটগল্পের পরিধি ছোট হওয়ার কারণে ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ উপস্থাপন সম্ভব নয় এবং তা অপ্রয়োজনীয়। তবে ছোটগল্পের আরম্ভ ও উপসংহার নাটকীয় হতে হবে। 

প্রশ্ন-৮. শেষ হয়েও হইল না শেষ'- উক্তিটি কোন সাহিত্য কর্মের জন্য প্রযোজ্য? — ব্যাখ্যা করো। 
উত্তর: ছোটগল্পের শুরু ও শেষ নাটকীয়ভাবে সম্পন্ন হয়ে পাঠক হৃদয়ে তা এক প্রকার অতৃপ্তির বেদনা জাগায় যা প্রশ্নোত্ত পক্তিতে বলা হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ তাঁর একটি কবিতায় ছোটগল্পের প্রকৃতি সম্পর্কে চমৎকার অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তা হলো ছোটগল্প মানব জীবনের একটি ক্ষুদ্র অংশ নিয়ে শুরু হবে। শেষও হবে নাটকীয়ভাবে। কিন্তু ছোটগল্প পাঠকের মনে এক ধরনের অতৃপ্তির বেদনা জাগাবে। তা হলেই এটা স্যার্থক ছোটগল্প হয়ে উঠবে। প্রশ্নোক্ত পঙ্ক্তিতে ছোটগল্পের বৈশিষ্ট্য বোঝাতে এ কথা বলা হয়েছে। 

প্রশ্ন-৯. কোন সাহিত্যকর্মে জীবনের খণ্ডাংশের রূপায়ণ দেখা যায় ? 
উত্তর: ছোটগল্পে জীবনের খণ্ডাংশের রূপায়ণ দেখা যায়। ছোটগল্পে আরম্ভ ও উপসংহার নাটকীয় হয়। এটা শেষ হয়েও যেন শেষ হয় না। অথচ এসব কিছুর মধ্যেও গল্পটিকে আকর্ষণীয় করে তোলা হয়। এতে জীবনের পূর্ণাবয়ব সম্ভব হয় না। এসব কারণে ছোটগল্পকে জীবনের খণ্ডাংশের রূপায়ণ বলা হয়। 

প্রশ্ন-১০. সার্থক ছোটগল্প বলতে তুমি কী বোঝ? 
উত্তর: সার্থক ছোটগল্প ক্ষুদ্র কলেবরে শেষ না হওয়ার অতৃপ্তি নিয়ে শেষ হয় পাঠক-হৃদয়ে রসসিক্ত ব্যঞ্জনার মাধুর্য দিয়ে। সার্থক ছোটগল্পের ব্যাপ্তি, ঘটনার কলেবর থাকবে ক্ষুদ্র ও সংক্ষিপ্ত। কিন্তু তার মাঝেই ব্যক্ত হবে নিগূঢ় রস ব্যঞ্জনা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সার্থক ছোটগল্পের সমাপ্তি যা পাঠকের মনোজগতে শেষ হয়ে হইল না। শেষ এই ব্যঞ্জনাপূর্ণ ভাবের উদয় ঘটাবে। 

প্রশ্ন-১১ মঙ্গল কাব্যকে উপন্যাস বলা যায় না কেন?
উত্তর: গদ্য ভাষার উপাদান না থাকায় মঙ্গল কাব্যকে উপন্যাস বলা যায়। না। উপন্যাসে কোনো একটি কাহিনি বর্ণিত হয়ে থাকে এবং কাহিনিটি গদ্যে লিখিত হয়। অর্থাৎ গদ্যভাষা উপন্যাসকে স্বতন্ত্র করে তুলে। মঙ্গল কাব্যে গল্প বা কাহিনি থাকলেও তা ছন্দে রচিত। তাই বাংলা সাহিত্যে ছন্দোবস্থ মঙ্গল কাব্যকে উপন্যাস বলা যায় না। 


বাংলা ১ম পত্র অনুধাবনমুলক প্রশ্ন উত্তর

Post a Comment

Previous Post Next Post