শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (PDF ১০০% বোর্ড কমন উত্তর উত্তর)

শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব গল্পের দিনগুলি গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর । শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব  গল্পকে বিশ্লেষণ করলে অনেকগুলো অনুধাবনমূলক প্রশ্ন পাওয়া যায় তার ভিতর বাছাইকৃত ও গুরুত্বপূর্ণ। নবম দশম শ্রেণীর বাংলা প্রথম পত্র শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব গল্পের দিনগুলোর গল্পের প্রশ্ন উত্তর নিম্নে দেওয়া হলো

শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন-. জীবসত্তা ও মানবসত্তা বলতে কী বোঝ? 
উত্তর: ১ ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব' প্রবন্ধে মোতাহের হোসেন চৌধুরী মানুষের দুটি সত্তার কথা বলেছেন- জীবসত্তা ও মানবসত্তা। জীবসত্তা হলো মানুষের জৈবিক বা শারীরিক দিক। আর মানবসত্তা হলো তার মনুষ্যত্বের দিক। অন্য যেকোনো জীবের মতো মানুষকে খেতে হয়, পান করতে হয় অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য। এক্ষেত্রে মানুষ নিছক জীব মাত্র। তবে জীবসত্তাই মানুষের একমাত্র রূপ নয়। মানুষের আছে মন। তার সাহায্যে জীবসত্তাকে পার হয়ে মানুষ আস্বাদ নেয় অনুভূতি আর কল্পনার। মানুষ খুঁজে নিতে চেষ্টা করে আত্মিক মুক্তি। এই সত্তাই হলো মানবসত্তা। 

প্রশ্ন-২ মনুষ্যত্বে উত্তরণের ক্ষেত্রে শিক্ষা কী ভূমিকা পালন করে? ব্যাখ্যা করো। 
উত্তর: মনুষ্যত্বে উত্তরণের ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রধান ভূমিকা পালন করে। “শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব' প্রবন্ধের বিষয়বস্তু অনুসারে অর্থচিন্তা বা অন্নচিন্তা হচ্ছে মানবসভায় পৌঁছানোর প্রথম ধাপ। অন্নবস্ত্রের দুশ্চিন্তায় মনুষ্যত্বের সাধনা যাতে ব্যর্থ না হয় সেজন্য প্রয়োজন সুশৃঙ্খল সমাজব্যবস্থা। এখানে মানুষ স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে শেখে এবং নিজের মধ্যে সুপ্ত মনুষ্যত্বের উদ্বোধন ঘটায়। শিক্ষা তাকে পরিপূর্ণ মনুষ্যত্বের স্বাদ দেয়। আর এভাবেই মানুষ লাভ করে প্রকৃত মুক্তি।

 প্রশ্ন ৩ কীভাবে মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটে? 
উত্তর: শিক্ষার মাধ্যমে মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটে। শিক্ষা মানুষের মূল্যবোধ জাগিয়ে তোলে, মানসিক মুক্তি ঘটায়। প্রকৃত মুক্তির ফলেই মানুষের মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটে। শিক্ষার ফলে মনুষ্যত্বের স্বাদ পেলে অন্নবস্ত্রের সমাধানও সহজ হয়ে ওঠে। তাই বলা যায়, প্রকৃত শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমেই মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটানো সম্ভব। 

প্রশ্ন ৪ শিক্ষার অপ্রয়োজনীয় দিকই শ্রেষ্ঠ দিক কেন? 
উত্তর: শিক্ষার অপ্রয়োজনের দিকটি মানুষের মনুষ্যত্বের স্ফুরণ ঘটায় বলে তাকে শ্রেষ্ঠ দিক বলা হয়েছে। শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব' প্রবন্ধে লেখক শিক্ষার দুটি দিকের কথা উল্লেখ করেছেন; যার প্রথমটি মানুষের জৈবিক চাহিদা তথা ক্ষুধা-তৃষ্ণাকে মেটায়। আর দ্বিতীয় দিকটি মানুষের অনুভূতির জগতে প্রবেশ করে তাকে কল্পনার রস আস্বাদনে সাহায্য করে তথ্য মনুষ্যত্ব বিকাশে সাহায্য করে। যেহেতু মনুষ্যত্বের বিকাশের মাধ্যমেই একজন মানুষ প্রকৃতার্থে মানুষ হতে পারে; তাই শিক্ষার দ্বিতীয় দিক তথা মনুষ্যত্ব বিকাশের দিককে শ্রেষ্ঠ দিক বলা হয়েছে। 

প্রশ্ন-৫ 'অর্থচিন্তার নিগড়ে সকলে বন্দি’ – কীভাবে? ব্যাখ্যা করো। 
উত্তর: জীবনধারণের জন্য অর্থের অনিবার্যতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার ফলে মানুষ সে গণ্ডিতে আবদ্ধ হয়েছে বলে প্রাবন্ধিক এ মন্তব্য করেছেন। প্রাবন্ধিকের পর্যবেক্ষণ অনুসারে জীবন পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা যে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা পেয়েছি তা সম্পূর্ণ সঠিক নয়। ভুল এ শিক্ষা গ্রহণ করার ফলে আমাদের জীবনের নিচের তলা তথা জীবসত্তা এতটাই বিশৃঙ্খল হয়ে পড়েছে যে আমরা তা থেকে চোখ ফেরাতে পারছি না। ফলে অর্থসাধনা আমাদের জীবনসাধনাতে রূপান্তরিত হয়েছে। এ কারণে এর গণ্ডিতে আমরা বন্দি হয়ে গেছি। 

প্রশ্ন-৭ ‘লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু' লেখক একথা বলেছেন কেন? 
উত্তর: লোভের ফলে মানুষের আত্মার মৃত্যু ঘটে বলে তার পতন অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে। ভের ফে লোভ মানবচরিত্রের অত্যন্ত নেতিবাচক একটি দিক। আত্মিক মৃত্যু ঘটায় মানুষ অনুভূতির জগতে নিঃস্ব হয়ে পড়ে। তার অন্তর্নিহিত শক্তি লোপ পায়। ফলে ভালো বা মহৎ কিছু করা তার পক্ষে সম্ভব হয় না। ইতিবাচক গুণ হারিয়ে অবশেষে তার পতন ঘটে।

 প্রশ্ন-৮ মানুষ কী কারণে অনুভূতির জগতে ফতুর হয়ে পড়ে? 
উত্তর: আত্মার মৃত্যু ঘটলে মানুষ অনুভূতির জগতে ফতুর হয়ে পড়ে। মনুষ্যত্বের অধিকারী একজন মানুষ সহজেই বুঝতে পারে যে, 'লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু” । অন্যদিকে যে লোভের ফাঁদে পা দেয়, সে ছোট জিনিসের মোহে বড় জিনিস হারাতেও কুণ্ঠাবোধ করে না। অর্থাৎ সাময়িক স্বার্থসিদ্ধির জন্য সে মনুষ্যত্বকে বিসর্জন দেয়। মনুষ্যত্বের মর্যাদা বোঝার মতো অনুভূতির এই অনুপস্থিতির কারণেই ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব' প্রবন্ধের লেখক বলেছেন, লোভের ফাঁদে পা দেওয়া মানুষ অনুভূতির জগতে ফতুর হয়ে পড়ে। 

প্রশ্ন-৯ 'যেখানে মূল্যবোধের মূল্য পাওয়া যায় না, সেখানে শিক্ষা নেই।'— প্রাবন্ধিক এ কথা কেন বলেছেন? 
উত্তর: যেখানে মূল্যবোধের মূল্য পাওয়া যায় না, সেখানে শিক্ষা নেই কারণ শিক্ষার আসল কাজ মূল্যবোধ সৃষ্টি। শিক্ষা মানুষকে তার অস্তিত্ব সম্পর্কে সচেতন করে তুলে জীবনকে করে সুন্দর ও উপভোগ্য। তাই শিক্ষার মাধ্যমে মানুষকে মানবিক করে তোলার জ্ঞান দান করা হয়, মানুষের ভেতরে মূল্যবোধ জাগিয়ে তোলা হয়। এই মূল্যবোধ জাগানোর জন্যই শিক্ষা জ্ঞান পরিবেশন করাকে বাহন হিসেবে নিয়েছে। 

প্রশ্ন-10 আত্মার অমৃত উপলব্ধি' বলতে লেখক কী বোঝাতে চেয়েছেন? 

উত্তর: আত্মার অমৃত উপলব্ধি বলতে লেখক মানবজীবনকে সঠিকভাবে উপভোগ করাকে বুঝিয়েছেন ।জন্মগতভাবে মানুষের মধ্যে বিরাজমান জীবসত্তা ও মানবসত্তার বিকাশের পরম্পরা তুলে ধরতেই আত্মার অমৃত উপলব্ধি প্রয়োজন। শিক্ষা যেমন আমাদের অন্ন-বস্ত্রের চিন্তা থেকে মুক্তির পথ দেখায় তেমনি শেখায় কীভাবে জীবনকে উপভোগ করতে হয়। কেবল অর্থচিন্তা নিয়ে ব্যস্ত থাকলে আত্মার অমৃত উপলব্ধি করা যায় না। শিক্ষার মাধ্যমে চিন্তা, বুদ্ধি ও আত্মপ্রকাশের স্বাধীনতা পেলে মনের মালিক হয়ে কল্পনা ও অনুভূতির রসাস্বাদন করা যায়। ফলে আত্মার অমৃত উপলব্ধি সম্ভব হয়। 


বাংলা ১ম পত্র অনুধাবনমুলক প্রশ্ন উত্তর

Post a Comment

Previous Post Next Post