বই পড়া গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (PDF ১০০% বোর্ড কমন উত্তর উত্তর)

বই পড়া গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

বই পড়া দিনগুলি গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর।বই পড়া গল্পকে বিশ্লেষণ করলে অনেকগুলো অনুধাবনমূলক প্রশ্ন পাওয়া যায় তার ভিতর বাছাইকৃত ও গুরুত্বপূর্ণ। নবম দশম শ্রেণীর বাংলা প্রথম পত্র বই পড়া গল্পের প্রশ্ন উত্তর নিম্নে দেওয়া হলোবই পড়া গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন-১. আমরা জাতি হিসেবে শৌখিন নই— বুঝিয়ে লেখো। 
উত্তর, মৌলিক চাহিদা মেটাতে ব্যস্ত বাঙালিরা তাদের শখের বিষয়ে মনোযোগ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। দুঃখ-দারিদ্র্যের দেশে বাঙালিরা স্বাভাবিকভাবে জীবন ধারণ করতেই হিমশিম খায়। ফলে তারা হয়ে উঠেছে উদরসর্বস্ব ও নিরস প্রকৃতির। শখ বা শৌখিনতা নিয়ে ভাবার সুযোগ বা ইচ্ছা আর হয়ে ওঠে না তাদের। তাই বই পড়ার মতো একটি সুন্দর শখও তাদের কাছে অপ্রয়োজনীয় কাজ বলে মনে হয়। 

প্রশ্ন-২. 'আমাদের এখন ঠিক শখ করবার সময় নয় উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।
 উত্তর: দুঃখ-দারিদ্র্যের দেশে শখ করে কোনোকিছু করা মানে নিজের দুঃখকেই বাড়িয়ে তোলা। বাঙালি জাতিকে সব সময় দুঃখ-দারিদ্র্য আর নানা বিপদের মোকাবিলা করে চলতে হয়। যেখানে মানুষের মানবিক চাহিদাগুলোই পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না সেখানে শখ করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। তাই বই পড়া সর্বশ্রেষ্ঠ শখ হলেও বাঙালির আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতিতে শখ করে বই পড়ার কোনো উপায় নেই।  
প্রশ্ন-৩ আমাদের গায়ের জ্বালা ও চোখের জল দূর করতে শুধু শিক্ষাই যথেষ্ট নয় কেন? 
উত্তর: আমাদের গায়ের জ্বালা ও চোখের জল দুটোই দূর করতে হলে শিক্ষার পাশাপাশি সাহিত্যচর্চাও একান্ত প্রয়োজন। জীবনকে সার্থক, সুন্দর ও মহৎ করার প্রথম ও প্রধান শর্ত শিক্ষা। আর শিক্ষার ফল সঠিকভাবে প্রতিফলিত করতে সাহিত্যচর্চা অবশ্যই করণীয়। কারণ সাহিত্যচর্চা শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ। তাই আমাদের গায়ের জ্বালা ও চোখের জল দূর করতে শুধু শিক্ষাই যথেষ্ট নয়।  

প্রশ্ন-৪ ইংরেজি সভ্যতার সংস্পর্শে এসেও ডেমোক্রেসিকে আমরা কীভাবে আয়ত্ত করেছি? ব্যাখ্যা করো। 

উত্তর: ইংরেজি সভ্যতার সংস্পর্শে এসে আমরা ডেমোক্রেসির গুণগুলো আয়ত্তে না আনতে পারলেও তার দোষগুলো আত্মসাৎ করেছি। ডেমোক্রেসির প্রবর্তকরা সবাইকে সমান করার লক্ষ্য থেকেই ডেমোক্রেসির উদ্ভাবন করেন। কিন্তু ডেমোক্রেসির অনুসারীরা যার যার মতো বড় হতে চায়। শিক্ষিত মানুষের লোলুপদৃষ্টি অর্থের ওপরই পড়ে রয়েছে। ফলে তারা সাহিত্যের সার্থকতার চেয়ে অর্থের সার্থকতাই বেশি বোঝে। আর অর্থ যেহেতু সকল অনর্থের মূল, সেহেতু ডেমোক্রেসিও পরিণত হয়েছে অনর্থকতায়। 

প্রশ্ন-৫, লাইব্রেরি কীভাবে দেশের উপকারে আসে? ব্যাখ্যা করো।  
উত্তর: সৃজনশীল রচনামূলক প্রশ্ন নং ১৭-খ দেখো। প্রশ্ন-১১. সাহিত্যচর্চা ও লাইব্রেরি কীভাবে সম্পর্কযুক্ত? উত্তর: সাহিত্যচর্চা এবং লাইব্রেরি একে অপরের পরিপূরক। লাইব্রেরি ছাড়া সাহিত্যচর্চা সম্ভব নয়। কারণ সাহিত্যচর্চার জন্য যে উন্মুক্ত সৃজনশীল পরিবেশের প্রয়োজন তা শুধু লাইব্রেরিতেই সম্ভব। সাহিত্য মানুষের মনকে মুক্তি দিয়ে আত্মার উন্নতি করে। বিদ্যার বা সীমাবদ্ধ যেকোনো গণ্ডিতে সাহিত্যচর্চা করা সম্ভব নয়। লাইব্রেরির উন্মুক্ত পরিবেশেই কেবল তা সম্ভব। তাই সাহিত্যচর্চা ও লাইব্রেরি ওতপ্রোতভাবে সম্পর্কযুক্ত। 

প্রশ্ন-৬ ধনের সৃষ্টি যেমন জ্ঞানসাপেক্ষ তেমনি জ্ঞানের সৃষ্টি মন ?
উত্তর: প্রশ্নোক্ত বক্তব্যটির তাৎপর্য হলো- জ্ঞানের উন্নতির উপর ধন ও মনের উন্নতি নির্ভরশীল। আমাদের বর্তমান সমাজের ধারণা হলো জ্ঞান অর্জন করে ভালো চাকরির মাধ্যমে ধনী হওয়া। সাহিত্যচর্চাকে অনর্থক ও অপচয় ভেবে এবং এতে নগদ অর্থ প্রাপ্তির সম্ভাবনা কম বিধায় এর প্রতি কেউ আগ্রহী হয় না। অথচ বর্তমান যুগে জ্ঞানের উন্নতির সাথে ধনের ও মনের গভীর সম্পর্ক। জ্ঞান আছে বলেই ধনের সৃষ্টি এবং মন আছে বলে জ্ঞানের গুরুত্ব বিদ্যমান আছে। 

প্রশ্ন-৭ সাহিত্যের মধ্যে আমাদের জাত মানুষ হবে' বলতে লেখক কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: সাহিত্যচর্চার মধ্য দিয়ে আমাদের জাত মানুষ হবে বলতে লেখক বুঝিয়েছেন– সাহিত্যচর্চার মধ্য দিয়ে ব্যক্তির মানসিক বিকাশের কথা। প্রাবন্ধিক আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে পর্যালোচনা করে দেখেছেন যে তাতে পাশ করা মানুষের সংখ্যা বাড়লেও প্রকৃত শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে না। কারণ সাহিত্যচর্চা ভিন্ন কোনো ব্যক্তিই প্রকৃত মানুষ হতে পারে না। এ কারণে প্রাবন্ধিক শিক্ষার জন্য সাহিত্যচর্চাকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম বলে মনে করেছেন। প্রকৃত মানুষ হওয়ার জন্য সাহিত্যচর্চা ভিন্ন অন্য কোনো পথ আছে বলে মনে করেন না প্রাবন্ধিক। 

প্রশ্ন-৮ একজন যথার্থ শিক্ষকের সার্থকতা কীসে তা বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর. শিক্ষার্থীর মনে জ্ঞান তৃষ্ণা জাগিয়ে তোলা এবং তা অর্জনে তাকে সক্ষম করে তোলার মধ্যেই একজন যথার্থ শিক্ষকের সার্থকতা নিহিত। নিজের জ্ঞানের ভাণ্ডার ছাত্রের সামনে উন্মুক্ত করে দিলেই যথার্থ শিক্ষক হওয়ায় যায় না। একজন শিক্ষক তখনই সার্থক হন যখন তিনি ছাত্রকে স্বেচ্ছায় জ্ঞানার্জনে আগ্রহী করে তুলতে পারেন। একজন যথার্থ শিক্ষক তার ছাত্রের আত্মাকে উদ্বোধিত করেন ও তার অন্তর্নিহিত শক্তিকে জাগ্রত করে তোলেন। এর মধ্যেই যথার্থ শিক্ষকের সার্থকতা 

প্রশ্ন-৯ প্রাবন্ধিক গুরুকে উত্তরসাধক বলেছেন কেন? 
উত্তর: প্রাবন্ধিক গুরুকে উত্তরসাধক বলেছেন কারণ গুরু শিষ্যের আত্মাকে উদ্বোধিত করেন এবং তার অন্তর্নিহিত সকল প্রচ্ছন্ন শক্তিকে জাগিয়ে দেন। বস্তুতপক্ষে বিদ্যার সাধনা শিষ্যকে নিজে অর্জন করতে হয়। যথার্থ গুরুশিষ্যের আত্মাকে উদ্বোধিত করেন এবং তার অভ্যন্তরের সকল সুপ্ত শক্তিকে শিষ্যের কাছে তুলে ধরেন। সে শক্তির বলে শিষ্যকে নিজেকেই নিজের মন গড়তে হয়, বিদ্যা অর্জন করতে হয়। তাই শিক্ষক শুধু বিদ্যার সন্ধান দিতে পারেন। কিন্তু তা অর্জন করার দায়িত্ব ছাত্রের নিজের। এ কথাটি বোঝাতেই লেখক গুরুকে শুধু উত্তরসাধক বলেছেন।  

প্রশ্ন-১০. দেহের মৃত্যুর রেজিস্টারি রাখা হয়, আত্মার হয় না' কথাটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: উদ্ধৃত উক্তিটিতে লেখক আমাদের সমাজের শিক্ষা পদ্ধতি এবং চলমান প্রথায় দগ্ধ হয়ে যে অসংখ্য আত্মার মৃত্যু হচ্ছে তার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। স্কুল কলেজের শিক্ষা ছাত্রদের ওপর বাধ্যগত হওয়ায় তারা শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য ও আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়। জোরপূর্বক পড়তে বাধ্য করায় অনেক ছাত্রের সুস্থ সবল মনের মৃত্যু হচ্ছে। কিন্তু সে আত্মার মৃত্যুর কোনো রেজিস্টার করা বা হিসাব রাখা হয় না বলে তার কোনো খবর কেউ রাখে না। লেখক সেকথার প্রতিই ইঙ্গিত করেছেন।

প্রশ্ন-১১. মনের হাসপাতাল বলতে কী বোঝায়? 
উত্তর: মনের হাসপাতাল বলতে লাইব্রেরিকে বোঝানো হয়েছে। শারীরিক সমস্যা নিরসনের জন্য যেমন হাসপাতালে যেতে হয়, তেমনি মনের বিকাশের জন্য দরকার বই। বই মনের প্রসারতা বাড়ায়। মনীষীদের অর্জিত জ্ঞান লেখনীর মধ্য দিয়ে বইয়ে প্রকাশ পায়, যার সংগ্রহশালা হলো লাইব্রেরি। মানসিক উৎকর্ষ সাধনের জন্য লাইব্রেরির এ অপরিহার্যতার বিবেচনায় লাইব্রেরিকে মনের হাসপাতাল বলা হয়েছে। 

প্রশ্ন-১২. আমাদের শিক্ষিত সম্প্রদায় বাধ্য না হলে বই স্পর্শ করে না কেন? 
উত্তর: অর্থকরী নয়, এমন সবকিছুই এদেশে নিরর্থক বলে বিবেচিত হওয়ায় আমাদের শিক্ষিত সম্প্রদায় বাধ্য না হলে বই স্পর্শ করে না। আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক পরিবেশে জীবনধারণ করাই সবকিছু। ফলে মানুষ বাধ্য হয়ে চাকরি লাভের প্রত্যাশায় ও চাকরি টিকিয়ে রাখার জন্যই বই পড়ে। কেননা বাঙালি জাতি শৌখিন নয়। তাই বাধ্য না হলে তারা বই স্পর্শ করে না। 

প্রশ্ন-১৩ আমাদের স্কুল-কলেজের শিক্ষার নেতিবাচক পরিণাম ব্যাখ্যা করো
উত্তর: আমাদের স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীদের সুশিক্ষিত করার চেয়ে নোট নির্ভর বা পরনির্ভর করে তোলে, যা কখনোই জীবনের প্রয়োজনে কাজে লাগে না। বাংলাদেশের স্কুল-কলেজের শিক্ষার যে রীতি তাতে ছাত্ররা নোট মুখস্থ করে পরীক্ষায় পাশ করে। ফলে শিক্ষার প্রায়োগিক দিকটি তার অজানাই থাকে। এমনকি পঠিত বিষয়ের সমর্থিত দিকটিকেও সে অনুধাবন করতে পারে না। তাই স্কুল-কলেজের শিক্ষা শুধু ব্যথই নয়, তা অনেকাংশে স্বশিক্ষিত হবার শক্তি পর্যন্ত নষ্ট করে দেয়। 

প্রশ্ন-১৪ আত্মার অপমৃত্যু’ বলতে কী বোঝ? 
উত্তর: মনের আনন্দময় বিকাশের অভাবে আত্মার যে মৃত্যু ঘটে আত্মার অপমৃত্যু বলতে তাকেই বোঝায়। মুখস্থনির্ভর আরোপিত শিক্ষার ফলে মানুষের মন নির্জীব হয়ে পড়ে। তার মনের আনন্দানুভূতি বিনষ্ট হয়। মনের আনন্দময় বিকাশ সাধিত হয় স্বতঃস্ফূর্ত কৌতূহল এবং স্বাধীন পাঠ্যচর্চার মাধ্যমে- এর অভাবে আত্মার অপমৃত্যু ঘটে। 

প্রশ্ন-১৫ মনের দাবি রক্ষা না করলে মানুষের আত্মা বাঁচে না কেন? 
উত্তর: জাতিকে সজীব ও স্বতঃস্ফূর্ত রাখতে হলে মনের আনন্দময় বিকাশ নিশ্চিত করা অপরিহার্য, তাই মনের আনন্দ হ্রাস পেলে জাতির জীবনীশক্তিও স্থবির হয়ে পড়ে । জাতির প্রাণের বিকাশ নাগরিকদের আনন্দময় মানসিক বিকাশের ওপর নির্ভর করে। ভারহীন চিত্ত ও সবল মন বড়ো বড়ো স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের পূর্বশর্ত। আনন্দ ছাড়া মনের সে স্বাধীনতা ও সজীবতা মরে যায়। ফলে স্বপ্ন দেখার বদলে নৈরাশ্য ও হতাশা দানা বাঁধে। ক্রমান্বয়ে তা জাতিকেও স্থবিরতায় পর্যবসিত করে। নিরানন্দ জাতি তাই নির্জীব, নিষ্প্রাণ। 

প্রশ্ন ১৬. জাতির জীবনী শক্তি হ্রাস পায় কোন কারণে? 
উত্তর: সাহিত্যচর্চার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হলে জাতির জীবনীশক্তি হ্রাস পায়। সাহিত্যচর্চা মানুষকে নির্মল আনন্দ দেয়। মনকে সজীব, সরাগ ও সজাগ রাখে। আনন্দের স্পর্শ না পেলে মন ক্রমেই নির্জীব ও হতোদ্যম হয়ে পড়ে, হ্রাস পায় জীবনীশক্তি। যদি সাহিত্যচর্চার সাথে মনের সংযোগ থাকে তবে তা যথার্থ স্ফূর্তি লাভ করতে পারে। তাই যদি কোনো জাতি সাহিত্যচর্চার সাথে সংযোগহীন হয় তবে তাদের জীবনীশক্তি হ্রাস পায়। পাঠ্যবইয়ে অধ্যায়টি পড়ার সময় প্রশ্নগুলো তোমার মাথায় এসেছে কিনা, যদি না আসে 

বাংলা ১ম পত্র অনুধাবনমুলক প্রশ্ন উত্তর

Post a Comment

Previous Post Next Post