প্রবাস বন্ধু গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (PDF ১০০% বোর্ড কমন উত্তর উত্তর)

প্রবাস বন্ধু গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রবাস বন্ধু দিনগুলি গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর। প্রবাস বন্ধু গল্পকে বিশ্লেষণ করলে অনেকগুলো অনুধাবনমূলক প্রশ্ন পাওয়া যায় তার ভিতর বাছাইকৃত ও গুরুত্বপূর্ণ। নবম দশম শ্রেণীর বাংলা প্রথম পত্র প্রবাস বন্ধু গল্পের প্রশ্ন উত্তর নিম্নে দেওয়া হলো
প্রবাস বন্ধু গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন-১.আপনার সব কাজ করে দেবে জুতা বুরুশ থেকে খুনখারাবি - বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর: আপনার সব কাজ করে দেবে জুতা বুরুশ থেকে খুনখারাবি’। কথাটি দ্বারা আফগান আবদুর রহমানকে সকল কাজের কাজি হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। ‘প্রবাস বন্ধু’ গল্পের লেখক কাবুল ভ্রমণে গিয়ে গৃহকর্মী হিসেবে আফগান আবদুর রহমানকে পান। তবে আবদুর রহমান শুধু গৃহকর্মী নয়, গাইড, দেহরক্ষী এবং প্রয়োজন মতো যেকোনো কাজেই লেখককে সহায়তা করতে পারবে। আবদুর রহমানের এ ধরনের বহু গুণের পরিচয় দিতেই আলোচ্য উক্তিটি করা হয়েছে। 

প্রশ্ন-২.সকল কাজের কাজি’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? 
উত্তর: সকল কাজের কাজি’ বলতে আবদুর রহমানের কর্মদক্ষতাকে বোঝানো হয়েছে। আবদুর রহমান অনেক কর্মঠ এবং আকৃতিগত দিক থেকে দানব প্রকৃতির মানুষ। সে অনেক কঠিন কাজ খুব সহজেই করে ফেলতে পারে। পর্বতসমান বোঝা নিয়ে চলতে পারে। রান্নার কাজ থেকে শুরু করে অন্যান্য সব কাজে সে দক্ষ বলে তাকে সকল কাজের কাজি বলা হয়েছে। 

প্রশ্ন-৩ রিলিফ ম্যাপের চেহারা বলতে লেখক কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: আব্দুর রহমানের দৈহিক বর্ণনা দিতে গিয়ে লেখক রিলিফ ম্যাপের প্রসঙ্গ টেনেছেন। লেখকের বাবুর্চি আব্দুর রহমান বিশাল দেহের অধিকারী। তার গায়ের রং ফর্সা তবে শীত-গ্রীষ্মে গায়ের চামড়া ফেটে গেছে। লেখক আব্দুর রহমানের শরীরের ফাটা চামড়াকে রিলিফ ম্যাপের সাথে তুলনা করেছেন।

প্রশ্ন-৪ আফগানিস্তানের সংস্কার' বলতে কী বোঝানো হয়েছে? 
উত্তর: আফগানিস্তানের সংস্কার' বলতে গুরুজনদের প্রতি বিশেষ সম্মান প্রদর্শনকে বোঝানো হয়েছে। লেখকের সব কাজ করে দেওয়ার জন্য নিযুক্ত হয় আবদুর রহমান। দশাসই চেহারা সত্ত্বেও সে কখনো লেখকের চোখে চোখ রাখেনি। কারণ আফগানিস্তানের একটি সংস্কার হলো গুরুজনদের দিকে চোখে চোখ রেখে তাকাতে নেই। তাই এই সংস্কারকে আফগানিস্তানি সংস্কার হিসেবে অভিহিত করা হয়। 

প্রশ্ন-৫ দুটো চিনেমাটির ভাবরে যেন দুটো পান্তুয়া ভেসে উঠেছে।' কথাটি ব্যাখ্যা করো। 
উত্তর: লেখক তার চাকর আবদুর রহমানের চোখে ভাবের খেলা দেখে তার চোখকে পান্তুয়া বলে আখ্যায়িত করেছেন। আবদুর রহমান সবসময় মেঝের দিকে তাকিয়ে থাকত। কখনও তাকে খুব একটা চোখ ওঠাতে দেখা যায়নি। কিন্তু লেখক তার চোখে ভাবের খেলা গোপনে দেখেছেন। তখন লেখকের কাছে আবদুর রহমানের চোখ দুটিকে চিনেমাটির ডাবরে দুটো ভাসমান পান্তুয়া মনে হয়েছে।

প্রশ্ন-৬ 'রাইফেল চালাতে পার?'- এ প্রশ্নের উত্তরে আবদুর রহমান একগাল হাসল কেন? 
উত্তর: রাইফেল চালনার বিষয়ে নিজের পারদর্শিতার প্রতি ইঙ্গিত করতেই আবদুর রহমান লেখকের প্রশ্নের উত্তরে একগাল হাসল। 'রাইফেল চালাতে পার?' লেখকের এই প্রশ্নের উত্তরে আবদুর রহমান একগাল হাসল, কারণ এই কর্মটি তার কাছে ‘ডাল-ভাতের' মতোই ব্যাপার। অর্থাৎ কিনা খুবই সহজতর কাজ। পাশাপাশি সে এটিও বোঝাল যে, এতে সে অভ্যস্ত এবং সিদ্ধহস্তও বটে। 

প্রশ্ন-৭ 'অতটা তার মাথায় খেলেনি, অথবা ভাববার প্রয়োজনবোধ করেনি' উক্তিটির প্রাসঙ্গিকতা বুঝিয়ে লেখো। 
উত্তর: আফগানিস্তানে থাকাবস্থায় লেখকের চাকর আবদুর রহমান মস্ত বড় বোঝা বহন করে নিয়ে আসা প্রসঙ্গে আলোচ্য উক্তিটি করা হয়েছে। বিশালদেহী ও শক্তিমান আবদুর রহমান পর্বতপ্রমাণ এক বোঝা নিয়ে বাসায় ফিরে আসছিল। লেখক তখন তাকে এত বড় বোঝা দুজনে ভাগাভাগি করে আনার গুরুত্ব তুলে ধরেন। কিন্তু লেখকের সে কথায় আবদুর রহমান কোনো কর্ণপাতই করেনি। কারণ সে যদি এ বোঝা বইতে না পারে তাহলে কাবুলে অন্য কেউ নেই যে একা এ বোঝা বহন করতে পারে। 

প্রশ্ন-৮ খাবার টেবিলে গিয়ে লেখক কীরকম দৃশ্য দেখলেন? বর্ণনা 
উত্তর: খাবার টেবিলে গিয়ে লেখক দেখলেন বিভিন্ন রকমের খাবার সাজিয়ে রাখা হয়েছে গভীর রাতে লেখক বাইরে থেকে এসে খাবার টেবিলে গেলেন। গিয়ে দেখলেন ডাবর নয়, ছোটখাটো একটা গামলাভর্তি দুম্বার মাংসের কোরমা, যা পেঁয়াজ-ঘিয়ের ঘন ক্বাথে তৈরি করা হয়েছে। তার মাঝে কিছু বাদাম কিসমিস দেয়া। আলুও আছে। আরেক প্লেটে শামী কাবাব। বারকোশে এক ঝুড়ি কোফতা-পোলাও আর তার মধ্যে আছে আস্ত একটি মুরগির 

প্রশ্ন-৯ মাংসের গামলায় লেখক আলুকে অপাত্তেয় বললেন কেন? ব্যাখ্যা করো। 
উত্তর: মাংসের গামলায় নানা লোভনীয় জিনিসের ছড়াছড়ি থাকলেও সেখানে আলু মানানসই ছিল না বলে লেখক আলুকে অপাঙ্ক্তেয় বললেন। আফগানিস্তানে বেড়াতে গেলে সেখানে লেখকের দেখভালের দায়িত্বে ছিল আবদুর রহমান নামের একজন ভৃত্য। লেখকের রাতের খাবারের আয়োজন করতে গিয়ে সে ছয়জনের পরিমাণ খাবার রান্না করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল এক গামলা ভর্তি মাংসের কোরমা। বাদাম ও কিসমিস দিয়ে রান্না করা মাংস অত্যন্ত আকর্ষণীয় মনে হলেও সেখানে আলু মোটেই লোভনীয় ছিল না। তাই লেখক আলুকে অপাত্তেয় বললেন। 

১০ আস্ত উটের রোস্টটা হয়ত দিতে ভুলে গেছে'—কথাটি লেখক কেন ভেবেছেন? 
উত্তর: আবদুর রহমানের একের পর খাবার পরিবেশন প্রসঙ্গে লেখক কথাটি ভেবেছেন। আবদুর রহমান একজন লোকের খাবার আয়োজন করতে গিয়ে ছয়জনের পরিমাণ খাবারের আয়োজন করে। হরেক রকমের খাবারের আয়োজন করে সে। এক গামলা ভর্তি মাংসের কোরমা, বোম্বাই সাইজের গোটা আষ্টেক শমী কাবাব, কোফতা-পোলাওর ওপর আস্ত মুরগির রোস্ট, বাগেবালার বরফি আঙুর, কাবুলি সবুজ চা। খাবার শেষে লেখকের চা খাওয়া হলে আবদুর রহমান দশ মিনিটের জন্য বেরিয়ে গেল। তখন লেখক শংকাগ্রস্ত হয়ে ভাবেন, আবার হয়তো কিছু একটা নিয়ে আসবে। আস্ত উটের রোস্টটা হয়ত দিতে ভুলে গিয়েছে।' 

প্রশ্ন-১১ 'তামাম আফগানিস্তান মশহুর' কোন খাবার সম্পর্কে এমন মন্তব্য করা হয়েছে? 
উত্তর: বাগেবালার বরফি আঙুর সম্পর্কে প্রশ্নোক্ত এমন মন্তব্যটি করা হয়েছে। আবদুর রহমান লেখককে একের পর এক নানা পদের খাবার পরিবেশন করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় তিনি বাগেবালার বরফি আঙুর দিয়ে বললেন সেটা নাকি তামাম আফগানিস্তানে মশহুর। লেখক একটা আঙুর মুখে দেয়ামাত্র তার ব্রহ্মরন্দ্র পর্যন্ত ঝিনঝিন করে উঠেছিল। তবু আবদুর রহমানকে খুশি করার জন্য তিনি গোটা আটেক আঙুর খেয়েছিলেন। 

প্রশ্ন-১২.আমার রান্না হুজুরের পছন্দ হয়নি। লেখকের প্রতি আগা আবদুর রহমানের এ অনুযোগের কারণ কী? 
উত্তর: আবদুর রহমানের চোখে লেখক পর্যাপ্ত খাবার খাননি— এ কারণেই তার এই অনুযোগ। 
আবদুর রহমানের রান্নার দক্ষতা ও রসনাবোধ অতিমাত্রায় প্রবল। সে বিচিত্র সব সুস্বাদু পদ প্রচুর পরিমাণে রান্না করে লেখককে খেতে দেয়। ক্ষুধার্ত অবস্থায় লেখকও সেসব রান্না পেট পুরে, তৃপ্তি করে খান। কিন্তু আবদুর রহমানের মতন ভোজনরসিক ও দশাসই চেহারার মানুষ, পরিপূর্ণ ভোজন সত্ত্বেও লেখকের খাওয়াকে নিতান্ত সাধারণ ও কম ভেবে 'আমার রান্না হুজুরের পছন্দ হয়নি' বলে অনুযোগ করে।

 
প্রশ্ন-.১৩ তোমার বন্ধুটার সঙ্গে আমার তনুটা মিলিয়ে দেখো দিখিনি। - উক্তিটি বুঝিয়ে লেখো । 
উত্তর: আফগানিস্তানে লেখকের সেবক আবদুর রহমানকে তার বিশাল দেহের সাথে লেখকের ক্ষীণ দেহ মিলিয়ে দেখার প্রসঙ্গে আলোচ্য উক্তিটি করা হয়েছে। আবদুর রহমান বিশাল দেহের অধিকারী আফগান লোক। সে লেখকের সেবায় নিয়োজিত হয়ে সীমাহীন অতিথিপরায়ণতার পরিচয় দেয়। কিছুক্ষণ পর পরই বিভিন্ন রকম খাদ্যসামগ্রী নিয়ে সে লেখকের কাছে হাজির হয়, যা লেখকের ক্ষীণ দেহে সাবার করা কঠিন তাই তিনি আবদুর রহমানকে বোঝাতে চায় যে, তিনি তার মতো বিশাল দেহের 
লোক নন যে এত খাবার খেতে পারেন। 

প্রশ্ন-১৪ পানশির সম্পর্কে আবদুর রহমান লেখককে কীরকম বর্ণনা দিল? ব্যাখ্যা করো। 
উত্তর: আবদুর রহমান লেখককে পানশিরের মানুষ ও পরিবেশের মনোজ্ঞ বর্ণনা দিল। পানশির উত্তর আফগানিস্তানে অবস্থিত। আবদুর রহমানের নিজের জায়গা। আবদুর রহমানের ভাষায় সেখানে আস্ত একটা দুম্বা খেয়ে এক ঢোক পানি খেলেই আবার ক্ষিধে পায় আকাশের দিকে তাকিয়ে লম্বা একটা দম নিলেই তাজি ঘোড়ার সাথে বাজি রেখে ছোটা যায়। পানশিরের মানুষ যেন পায়ে হাঁটে না, বাতাসে ভর করে উড়ে চলে। শীতকালে এত ব্রফ পড়ে যে পথঘাট, মাঠ, পাহাড়, নদী সব বরফে ঢাকা পড়ে যায়। সব কাজ বন্ধ থাকে। 

প্রশ্ন-১৫ পানশিরের মানুষ তো পায়ে হেঁটে চলে না, বাতাসের উপর ভর করে যেন উড়ে চলে য়ায়।'উক্তিটি ব্যাখ্যা করো। 
উত্তর: স্বদেশভূম পানশিরের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে গিয়ে আবদুর রহমান আলোচ্য উক্তিটি করেছিল 
স্বদেশভূমি মানুষের প্রাণের চেয়ে প্রিয়। আবদুর রহমান স্বদেশভূমি পানশিরের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা প্রসঙ্গে বলে, আমার দেশ- সে কী জায়গা! একটা আস্ত দুম্বা খেয়ে এক ঢোক পানি খান, আবার ক্ষিধে পাবে। আকাশের দিকে মুখ করে একটা লম্বা দম নিন, মনে হবে তেজি ঘোড়ার সঙ্গে বাজি রেখে ছুটতে পারি। পানশিরের মানুষ তো পায়ে হেঁটে চলে না, বাতাসের উপর ভর করে যেন উড়ে চলে যায়। 

প্রশ্ন-১৬ পছন্দ না হয়, আবদুর রহমানের গর্দান তো রয়েছে'কথাটি ব্যাখ্যা করো। 
উত্তর: প্রশ্নোত্ত উত্তিটি দ্বারা আবদুর রহমান যে এক কথার লোক সেটাই বোঝানো হয়েছে আবদুর রহমানের কাছ থেকে টানা সাত দিন জানালার পাশে বসে বরফের পতন দেখার কথা শুনে অত্যন্ত বিস্মিত হন লেখক। তাঁর কাছে বিষয়টি নিতান্তই অবাস্তব বলে মনে হয়। কিন্তু আবদুর রহমান নিজের কথায় অটল থাকে। আলোচ্য কথাটির মাধ্যমে বুঝিয়ে দেয়, সে বাজে কথা বলার লোক না। বরফ পড়ার সৌন্দর্যে লেখক অবশ্যই মুগ্ধ হবেন 

প্রশ্ন-১৭ হ্যাঁ, আবদুর রহমান তোমার কথাই সই।'— কথাটি লেখক কেন বলেছেন? বুঝিয়ে লেখো। 
উত্তর: আবদুর রহমানের বর্ণনামতে শীতকালীন সময় পানশিরে কাটাবেন বলে লেখক আলোচ্য উক্তিটি করেছেন আবদুর রহমানের বর্ণনা, ‘পানশিরে শীতকালে সে কী বরফ পড়ে! বাইরে দেখবেন ব্রফ পড়ছে পড়ছে, পড়ছে দু দিন, তিন দিন, পাঁচ দিন, সাত দিন ধরে। আপনি জানালার ধারে বসেই আছেন, আর দেখছেন চে তৌর বর্ফ ববারদ— কী রকম বরফ পড়ে। তখন লেখক বলেন, 'হ্যাঁ, আবদুর রহমান তোমার কথাই সই। শীতকালটা আমি পানশিতেই কাটাব।' কারণ ‘তুমি যদি সমস্ত শীতকালটা জানালার পাশে বসে কাটাও তবে আমার রান্না করবে কে? 

প্রশ্ন-১৮ সে বড় খুশি বাৎ হবে হুজুর।— ব্যাখ্যা করো। 
উত্তর-আফগানিস্তানের একটি জায়গা হলো পানশির। সেখানে শীতকালে প্রচণ্ড বরফ পড়ে। বরফে পথঘাট, মাঠ, পাহাড়, নদী সব বরফে ঢাকা পড়ে যায়। সেখানকার বিশুদ্ধ বাতাসে শ্বাস নিলে আয়ু কয়েক বছর বেড়ে যায়। আবদুর রহমানের কাছে পানশিরের চমৎকার আবহাওয়ার কথা শুনে লেখক শীতকালটা পানশিরে কাটানোর বাসনা ব্যক্ত করেন। এতে খুশিতে আবদুর রহমান প্রশ্নোত্ত কথাটি বলেছে। 


বাংলা ১ম পত্র অনুধাবনমুলক প্রশ্ন উত্তর

Post a Comment

Previous Post Next Post