পল্লিসাহিত্য গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর (PDF ১০০% বোর্ড কমন উত্তর উত্তর)

পল্লিসাহিত্য গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

পল্লিসাহিত্য দিনগুলি গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর। পল্লিসাহিত্য গল্পকে বিশ্লেষণ করলে অনেকগুলো অনুধাবনমূলক প্রশ্ন পাওয়া যায় তার ভিতর বাছাইকৃত ও গুরুত্বপূর্ণ। নবম দশম শ্রেণীর বাংলা প্রথম পত্র পল্লিসাহিত্য গল্পের প্রশ্ন উত্তর নিম্নে দেওয়া হলোপল্লিসাহিত্য গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্ন-.১ পল্লিকবির শহুরে চক্ষুর অগোচরে পল্লিতে আত্মগোপন করে থাকার কারণ কী? 

উত্তর: পল্লিকবি শহুরে চক্ষুর অগোচরে পল্লিতে আত্মগোপন করে থাকার কারণ তাদের সাহিত্য মজিলসে এসে জগতের সঙ্গে চেনাশোনা করিয়ে দেয়ার স্বেচ্ছাসেবক দল নেই। পল্লির ঘাটে-মাঠে, পল্লির আলোবাতাসে, পল্লির প্রত্যেক পরতে পরতে সাহিত্য ছড়িয়ে আছে। লুকিয়ে আছে সাহিত্যের কতো অমূল্য খনি পল্লিজননীর বুকে। মনসুর বয়াতির মতো আরও কতো পল্লিকবি শহুরে চক্ষুর অগোচরে পল্লিতে আত্মগোপন করে আছেন, তাদের সাহিত্যের মজলিসে এসে জগতের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার মতো কোনো স্বেচ্ছাসেবক দল নেই। 

প্রশ্ন ২ বাংলার মুসলমানও সাহিত্য সম্পদে যে ধনী, একথা কীভাবে প্রমাণ করা যায়? 
উত্তর: পল্লির সাহিত্য সংগ্রহ ও সকলের সামনে তা প্রকাশ করা গেলে প্রমাণ করা যাবে বাংলার মুসলমানও যে সাহিত্য সম্পদে ধনী। মনসুর বয়াতির মতো অসংখ্য মুসলমান কবি এখনো লোকচক্ষুর অন্তরালেই রয়ে গেছে। তাদেরকে সাহিত্যের মজলিসে এনে জগতের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। পল্লি থেকে অজানা অচেনা কবিদের গাঁথা সংগ্রহ ও প্রকাশ করে প্রমাণ করতে হবে বাংলার মুসলমানও যে সাহিত্য সম্পদে কত ধনী । 

প্রশ্ন-৩ পল্লিসাহিত্যকে গবেষণাধর্মী বিষয় বলা হয় কেন? 
উত্তর: পল্লিসাহিত্য শুধু পল্লির রূপকল্পেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং সেটি সমগ্র বাঙালি জাতির প্রকৃত পরিচয় বহন করে বলে একে গবেষণাধর্মী বলা হয়। পল্লিসাহিত্য' প্রবন্ধে লেখক পল্লিসাহিত্য নিয়ে সবাইকে গবেষণা করার জন্য আগ্রহী করে তোলার প্রয়াস চালিয়েছেন। পল্লিসাহিত্যের মধ্যে পল্লির মানুষের জীবনাচরণের সাথে সাথে রয়েছে বাঙালি জাতির ইতিহাস, ঐতিহ্য, মূল্যবোধ ও নৃতাত্ত্বিক পরিচয়। এজন্য পল্লিসাহিত্যকে গবেষণাধর্মী বলা হয়।

প্রশ্ন-৪ ঠাকুরমার ঝুলি' বা 'ঠাকুরদার থলে' যথেষ্ট নয়” – কেন?
উত্তর: সৃজনশীল রচনামূলক প্রশ্ন নং ৪-খ দেখো। প্রশ্ন-১২. প্রবাদ আমাদের জীবনে কীভাবে জড়িয়ে আছে? উত্তর: প্রবাদ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। প্রবাদ পল্লিসাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যুগ যুগ ধরে মানুষ প্রাত্যহিক জীবনের কথাবার্তায় প্রবাদ ব্যবহার করে আসছে। প্রবাদ আমাদের বাকপটুতা ও চিত্রকর্ষের দীপ্তিকে প্রকাশ করে। শুধু কথার মধ্যেই প্রবাদের ব্যবহার সীমাবদ্ধ নয়। সাহিত্যের ক্ষেত্রে বিশেষ করে কথাসাহিত্যের শৈল্পিক উপস্থাপনায় প্রবাদ-প্রবচন একটি অপরিহার্য অনুষঙ্গ। সংলাপ ও সুভাষিত বাক্য বিন্যাসে প্রবাদের যুক্তিপূর্ণ ব্যবহার সাহিত্যের শিল্পগুণ বৃদ্ধি করে, রচনাকে পাঠকপ্রিয় করে তোলে। এজন্য আমাদের প্রাত্যহিক জীবন এবং শিল্পমণ্ডিত সাহিত্যচর্চার অপরিহার্য উপাদান হিসেবে প্রবাদ আমাদের জীবনে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে।

প্রশ্ন-৫ ‘খনার বচন' বলতে কী বোঝানো হয়েছে? 
উত্তর: খনার বচন বলতে প্রখ্যাত মহিলা জ্যোতিষী খনার কৃষিতত্ত্ব বিষয়ক ছড়াগুলোকে বোঝানো হয়েছে। খনা। ছিলেন প্রাচীন ভারতের প্রখ্যাত মহিলা জ্যোতিষী। তাঁর উপদেশমূলক ছড়াগুলো রচিত হয়ে বাংলাদেশের জলবায়ু নির্ভর কৃষিতত্ত্ব বিষয়ে। এটি পল্লিসাহিত্যের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ। জাতির পুরনো ইতিহাসের অনেক গোপন কথা খুঁজে পাওয়া যায় খনার বচনের মধ্যে।

প্রশ্ন-৬ ‘ভূয়োদর্শনের পরিপক্ক ফল' বলতে কী বোঝানো হয়েছে? 
উত্তর: প্রচুর দেখা ও শোনার মাধ্যমে অর্জিত অভিজ্ঞতাকে ভূয়োদর্শনের পরিপক্ক ফল বলা হয়েছে। পল্লির মাঠেঘাটে, পরতে পরতে প্রচুর সাহিত্য ও সাহিত্যের উপকরণ ছড়িয়ে আছে। উপকথা, রূপকথার গল্প, ছড়া, গান, প্রবাদ-প্রবচন পল্লিসাহিত্যের ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে। প্রবাদবাক্যে এবং ডাক ও খনার বচনে কতো যুগের ভূয়োদর্শনের পরিপক্ব ফল সঞ্চিত হয়ে আছে । শুধু তাই নয়, জাতির পুরোনো ইতিহাসের অনেক গোপন কথাও ডাক ও খনার বচনে ভূয়োদর্শনের মতো খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রশ্ন-৭ পল্লির কোন সাহিত্যকে মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সরস প্রাণের জীবন্ত উৎস বলেছেন? কেন? 
উত্তর: পল্লির মায়ের ঘুমপাড়ানী গান এবং খোকা-খুকির ছড়া গানকে মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সরস প্রাণের জীবন্ত উৎস বলেছেন। ‘পল্লিসাহিত্য' প্রবন্ধে মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলাদেশের বিশাল পল্লিসাহিত্যের নানা দিকের কথা উল্লেখ করেছেন। পল্লির এসব সাহিত্যের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ছড়া গান ও ঘুমপাড়ানী পান। প্রাবন্ধিক বর্তমানে এসব সাহিত্যের অভাব বোধ করে এগুলোর গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। গুরুত্বের বিবেচনা করতে গিয়েই তিনি এসব সাহিত্যকে সরল প্রাণের জীবন্ত উৎস বলেছেন।
 
প্রশ্ন-৮ 'পল্লি গানগুলো অমূল্য রত্নবিশেষ'- কেন? 
উত্তর: পল্লির গানগুলো যুগ যুগ ধরে লালিত পল্লিমানুষের জীবনালেখ্য বলে এগুলো আমাদের অমূল্য রত্নবিশেষ। পল্লিজীবনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত পল্লিগানগুলো বহু যুগ ধরে মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে আছে। গানগুলোর কথায়, সুরে এবং গায়কিতে কত প্রেম, কর আনন্দ, কত বেদনা, কত সৌন্দর্য, কত তত্ত্বজ্ঞান ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে তার তুলনা নেই। পল্লির প্রকৃতি, জীবন এবং মানুষের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান ও দর্শনের প্রকাশ ঘটে এসব গানে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে জারি সারি, বাউল, কীর্তন, ভাটিয়ালি, রাখালি, মারফতি, মুর্শিদি, কবিগান পালাগান ইত্যাদি বিচিত্র রকমের গান। বৈচিত্র্যপূর্ণ এ বিপুল সংগীত ভাণ্ডারের তুলনা সারা পৃথিবীতে নেই। অমূল্য রত্নের মতোই এগুলো আমাদের নিজস্ব সম্পদ। 

প্রশ্ন-৯ পল্লিসাহিত্য বলতে কী বোঝ? 
উত্তর: আবহমান কালের গ্রামবাংলার গৃহস্থ কৃষক, জেলে-মাঝি, মুটেমজুরদের জীবনাচরণ যে সাহিত্যে প্রতিফলিত হয়েছে, তাকে পল্লিসাহিত্য বলা হয় । বর্জিত। পল্লিসাহিত্যে গ্রামীণ জনপদের সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ, পাপ-পুণ্য, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক এই সাহিত্য। এই শ্রেণির সাহিত্যের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা নিপুণভাবে চিত্রিত হয়ে থাকে। বাংলাসাহিত্য, কৃষ্টি, কতিপয় বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন, এই সাহিত্য শহুরে কোলাহল গ্রাম বাংলার মর্মকথা-ই এই সাহিত্যর মূল উপজীব্য। প্রাচীন কাল থেকেই এই সাহিত্য মুখে মুখে প্রচলিত ও প্রচারিত হয়ে আসছে। রূপকথা, উপকথা, লোকছড়া, লোকগান, প্রবাদ-প্রবচন, লোকজ খেলাধুলা প্রভৃতি এই সাহিত্যের কতিপয় দৃষ্টান্ত। 

প্রশ্ন-১০ 'আজকাল বাংলাসাহিত্য বলতে যে সাহিত্য চলছে, তার পনের আনা হচ্ছে শহুরে সাহিত্য।'- ব্যাখ্যা করো। 
উত্তর: বর্তমান সময়ে শহরের মানুষের জীবনকে কেন্দ্র করে অধিকাংশ সাহিত্য রচিত হওয়ার দিকটি বোঝাতে প্রশ্নোক্ত কথাটি বলা হয়েছে। সাহিত্যে সব শ্রেণি পেশার মানুষের কথা উঠে আসে। কিন্তু বর্তমান সময়ে গান, কবিতা, নাটক প্রভৃতি সাহিত্যকর্মে শহুরে মানুষের জীবনযাপনের কথাই প্রকাশ পাচ্ছে। পল্লি তথা গ্রামীণ জনপদের মানুষের কথা সামান্যই তুলে ধরা হচ্ছে সেখানে। এ দৃষ্টিকোণ থেকেই আলোচ্য উত্তিতে বলা হয়েছে, আজকাল যে সাহিত্য রচিত হচ্ছে তার পনের আনাই শহুরে
 
প্রশ্ন- ১১ এবার ফিরাও মোরে' কবি সম্রাটের এ বক্তব্যের মর্মার্থ লেখো
উত্তর: ‘এবার ফিরাও মোরে কবি সম্রাটের এ বক্তব্যের মর্মার্থ মূলত পল্লিসাহিত্যের কাছে ফিরে যাওয়ার আকুলতা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নাগরিক সাহিত্য নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। পল্লিসাহিত্যের মাহাত্ম্য তিনি উপলব্ধি যে করেননি তা নয়। কিন্তু পল্লির জীবন ও পরিবেশ চিত্রনে তাঁর কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল, যা তিনি নিজেই উপলব্ধি করেছিলেন। পল্লিসাহিত্যের প্রতি তার এক ধরনের আকর্ষণ ছিল। কিন্তু পল্লির মাঝি, জেলে, কামার, কুমোরদের নিয়ে সাহিত্য রচনার জন্য যে অভিজ্ঞতা থাকা দরকার, শ্রেণিগত কারণে তা তার ছিল না। ফলে যদিও তিনি বলেছেন— 'এবার ফিরাও মোরে। কিন্তু পল্লিসাহিত্যের কাছে তিনি প্রকৃতপক্ষে ফিরতে পারেননি 

বাংলা ১ম পত্র অনুধাবনমুলক প্রশ্ন উত্তর

Post a Comment

Previous Post Next Post