SSC রসায়ন ৪র্থঅধ্যায়ের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
SSC রসায়ন ৩য় অধ্যায়েকে বিশ্লেষণ করলে অনেকগুলো অনুধাবনমূলক প্রশ্ন পাওয়া যায় তার ভিতর বাছাইকৃত ও গুরুত্বপূর্ণ। SSC রসায়ন ৩য় অধ্যায়ের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর। নিম্নে দেওয়া হলো
প্রশ্ন ১। ফসফরাস মৌলের পর্যায় সারণিতে অবস্থান ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : কোনো মৌলের সর্ববহিঃদ্ধ শেলের ইলেকট্রন সংখ্যা অনুসারে তার গ্রুপ এবং শেলের স্তরের সংখ্যা অনুসারে পর্যায় নির্ধারণ করা হয়। ফসফরাস (15) এর ইলেকট্রন বিন্যাস 2,851 শেল সংখ্যা 3টি এবং সর্ববহিঃস্থ স্তরে ইলেকট্রন সংখ্যা এটি সুতরাং ফসফরাস ওয় পর্যায়ের 5 + 10 15 নং গ্রুপে অবস্থান করবে।
প্রশ্ন ২। CI অপেক্ষা P এর তড়িৎ ঋণাত্মকতা কম- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : দুটি পরমাণু যখন সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে অণুতে পরিণত হয় তখন অণুর পরমাণুগুলো বন্ধনের ইলেকট্রন দুটিকে নিজের দিকে আকর্ষণ করে; এই আকর্ষণকে তড়িৎ ঋণাত্মকতা বলে। একই পর্যায়ের যত বাম থেকে ডানে যাওয়া যায় মৌলের আকার তত কমে, শেয়ারকৃত ইলেকট্রনের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি পায় ফলে তড়িৎ ঋণাত্মকতা বৃদ্ধি পায়। P ও CI একই পর্যায়ের মৌল এবং অবস্থিত হওয়ায় CI এর আকার ছোট তাই তড়িৎ ঋণাত্মকতা বেশি। অর্থাৎ CI অপেক্ষা P এর তড়িৎ ঋণাত্মকতা কম।
প্রশ্ন ৩। K এর গলনাঙ্ক Na এর চেয়ে কম কেন?
উত্তর : একই পর্যায়ে মৌলসমূহের গলনাঙ্ক পর্যায়ক্রমিকভাবে পরিবর্তিত হয়। একই গ্রুপে পারমাণবিক সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে পরমাণুর আকার বৃদ্ধি পায়। ফলে যোজ্যতা স্তরে ইলেকট্রন মেঘের ঘনত্বের হ্রাস ঘটে। পরমাণুর বন্ধন আকর্ষণ কমে যায় বলে গ্রুপের উপর হতে নিচের দিকে মৌলের গলনাঙ্ক ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে থাকে। তাই গ্রুপ-1 এর K মৌলের গলনাঙ্ক (63.7°C) Na মৌলের গলনাঙ্ক (97.8°C) অপেক্ষা কম হয়।
প্রশ্ন ৪। Rb কে ক্ষার ধাতু বলা হয় কেন?
উত্তর : Rb কে ক্ষারধাতু বলা হয়। কারণ এটি গ্রুপ-1 এ অবস্থিত মৌল এবং পানির সাথে বিক্রিয়া করে তীব্র ক্ষার (RbOli) তৈরি করে। বিক্রিয়া : 2Rb + 2H2O2RbOH + H2(g)
প্রশ্ন ৫। Mg কে মৃৎক্ষার ধাতু বলা হয় কেন?
উত্তর : পর্যায় সারণির 2নং গ্রুপের Be Mg Ca Sr Ba Ra এই ৬টি ধাতুকে মৃৎক্ষার ধাতু বলা হয়। পৃথিবীর উপরিভাগের মাটির আবরণ হলো ভূ-ত্বক। ভূ-ত্বকে বিভিন্ন ধাতু যৌগরূপে বিদ্যমান। ম্যাগনেশিয়াম (Mg) কে মাটির নিচে যৌগ রূপে পাওয়া যায় বলেই Mg কে মৃৎক্ষার ধাতু বলে। Mg মাটিতে MgO রূপে বিদ্যমান থাকে ।
প্রশ্ন ৬। ক্যালসিয়ামকে মৃৎক্ষার ধাতু বলা হয় কেন?
উত্তর : ক্যালসিয়ামকে (Ca)-কে মৃৎক্ষার ধাতু বলা হয়; এর কারণ হলো এটি গ্রুপ-2 এর মৌল এবং এদের অক্সাইডসমূহ পানিতে ক্ষারীয় দ্রবণ তৈরি করে। এছাড়া মৌলটি বিভিন্ন যৌগ হিসেবে মাটিতে থাকে।
Ca + 2H2O → Ca(OH)2 + H2(g)
প্রশ্ন ৭। হিলিয়াম নিষ্ক্রিয় গ্যাস— ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : হিলিয়াম একটি নিষ্ক্রিয় গ্যাস। কারণ হিলিয়ামের ইলেকট্রন বিন্যাস He (2) = 1s'2 অর্থাৎ ইলেকট্রন বিন্যাসে Is অরবিটাল ইলেকট্রন দ্বারা পূর্ণ থাকে। ১ম পর্যায়ের ক্ষেত্রে অন্য কোনো অরবিটাল না থাকায় এবং s অরবিটাল ইলেকট্রন দ্বারা পূর্ণ থাকায় হিলিয়াম মৌলটি অন্য কোনো মৌল এমনকি আরেকটি হিলিয়ামের সাথে যুক্ত হতে পারে না। ইলেকট্রন দান বা গ্রহণ এবং শেয়ারের মাধ্যমে যৌগ। গঠন করতে পারে না বলে এটি নিষ্ক্রিয় গ্যাস।
প্রশ্ন ৮। পটাশিয়ামকে ক্ষার ধাতু বলা হয় কেন?
উত্তর : পটাশিয়াম (K) কে ক্ষার ধাতু বলা হয়। কারণ পটাসিয়াম গ্রুপ-1 এর মৌল এবং পানির সাথে বিক্রিয়া করে তীব্র ক্ষারীয় KOH যৌগ উৎপন্ন করে। 2K + 2H2O2KOH + H2 আবার KOH অম্লের অম্লত্বকে বিনষ্ট করতে পারে এবং বিক্রিয়ায় লবণ ও পানি উৎপন্ন করে। KOH + HCI ক্ষার অম্ল তাই পটাশিয়ামকে ক্ষার ধাতু বলা হয়।
প্রশ্ন ৯। অবস্থান্তর মৌল বলতে কী বুঝায়?
উত্তর : পর্যায় সারণিতে গ্রুপ-3 থেকে গ্রুপ-11 পর্যন্ত অবস্থিত মৌলসমূহকে অবস্থান্তর মৌল বলে। অন্যভাবে বলা যায়, যেসব d ব্লকভুক্ত মৌলের সর্বশেষ স্তরের d অরবিটাল ইলেকট্রন দ্বারা আংশিকভাবে (d,1-9) পূর্ণ থাকে তাদেরকে অবস্থান্তর মৌল বলে। অবস্থান্তর মৌলসমূহের নিজস্ব বর্ণ আছে, এরা পরিবর্তনশীল যোজনী প্রদর্শন করে এবং প্রভাবক হিসাবে কাজ করতে পারে।
প্রশ্ন ১০। ক্লোরিনকে হ্যালোজেন বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
→ KCI + H2O লবণ পানি উত্তর : হ্যালোজেন মানে লবণ উৎপাদনকারী। এর মূল উৎস সামুদ্রিক লবণ। হ্যালোজেন মৌলগুলোর সাথে ধাতু যুক্ত হয়ে লবণ গঠিত হয়। যেমন CI এর সাথে Na ধাতু যুক্ত হয়ে সোডিয়াম ক্লোরাইড লবণ বা খাদ্য লবণ (NaCl) গঠিত হয় । এজন্যই ক্লোরিন (CI) কে হ্যালোজেন বলা হয় ।
প্রশ্ন ১১। Ba কে মৃৎক্ষার ধাতু বলা হয় কেন?
উত্তর : পর্যায় সারণির 2নং গ্রুপের Be Mg, Ca, Sr, Ba, Ra এই ৬টি ধাতুকে মৃৎক্ষার ধাতু বলা হয়। পৃথিবীর উপরিভাগের মাটির আবরণ হলো ভূ-ত্বক। ভূ-ত্বকে বিভিন্ন ধাতু যৌগরূপে বিদ্যমান। বেরিয়াম (Ba) কে মাটির নিচে যৌগ রূপে পাওয়া যায় বলেই Ba কে মৃৎক্ষার ধাতু বলে ৷ Ba মাটিতে BaO রূপে বিদ্যমান থাকে।